স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শ্রীলঙ্কার পরে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বৈশ্বিক এই স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) তিনি এই লাইসেন্স অনুমোদন করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক গত ২৫ মার্চ Non-Geostationary Orbit (NGSO) Satellite Services Operator In Bangladesh শীর্ষক লাইসেন্সিং গাইডলাইন জারি করে। উক্ত গাইডলাইনের আওতায় Starlink Services Bangladesh Non-Geostationary Orbit (NGSO) Satellite Services Operator License প্রাপ্তির জন্য প্রযোজ্য ফি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিটিআরসি বরাবর আবেদন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে আবেদনকৃত লাইসেন্স ইস্যুর জন্য গত ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ২৯৪তম কমিশন সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ বিষয়ে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব গণমাধ্যমকে জানান, প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে স্টারলিংক আজ এ অনুমোদন পেয়েছে। মে মাসের মাঝামাঝিতে চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। স্টারলিংক বাণিজ্যিকভাবে চালুর জন্য একটি অনুরোধ করেছে, যেটা লোকাল গেটওয়ে ছাড়া। সরকার ৯০ দিনের জন্য সে অনুমতি দেবে। এ ছাড়া তারা ট্যারিফ প্ল্যানের (সেবা মূল্য) জন্য কাজ করছে। এ বিষয়ে তারা বিটিআরসিতে আবেদন করবে।
প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের উপর্যুপরি ইন্টারনেট বন্ধের প্রতিবাদে স্টারলিংককে বাংলাদেশে নিয়ে আসা একটা গণদাবিতে পরিণত হয়েছিলো। পাশাপাশি বাংলাদেশকে বিনিয়োগবান্ধব হিসেবে একটি বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছা ছিলো প্রধান উপদেষ্টার।
স্টারলিংক ইন্টারনেট পরিষেবা বাংলাদেশে চালু করার লক্ষ্য হলো বারবার ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়াকে রোধ করা।
দেশে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করার জন্য বাজারে স্টারলিংকের প্রবেশকে বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও উদ্যোক্তাদের জন্য এটি উপকারী হবে।
বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো এরইমধ্যে স্টারলিংকের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনে সহযোগিতা করছে, যা স্যাটেলাইট সংযোগকে একীভূত করতে সহজতর করবে।
স্টারলিংক বর্তমানে ৬ হাজারের বেশি স্যাটেলাইট চালাচ্ছে এবং বিশ্বজুড়ে তিন মিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারীকে সেবা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এমন এলাকায় বড় পরিবর্তন আনতে পারে, যেখানে সাধারণ ফাইবার-অপটিক বা মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবা পাওয়া যায় না বা কাজ করে না।