দেশের শীর্ষ পাঁচ শিল্পগোষ্ঠীর মালিকরা কর ফাঁকি দিয়েছে কি না তা অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর।
এ লক্ষ্যে বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, সঞ্চয় অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন।
দেশের বিভিন্ন বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীর মালিকরা দীর্ঘদিন ধরেই নানা উপায়ে কর ফাঁকি দিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ আছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেয়। এর অংশ হিসেবে এসব প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাদের প্রতিষ্ঠানের কর ফাঁকি, অবৈধ সম্পদ খুঁজে পেতে বিশেষ অনুসন্ধান শুরু করেছে এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) ।
এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন গণমাধ্যমকে জানান, বিভিন্ন পন্থায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির বিশেষ অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে সিআইসি। সংস্থাটি বর্তমান সময়ে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ পর্যালোচনা এবং সুনির্দিষ্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সম্ভাব্য কর ফাঁকিবাজদের তালিকা সম্পন্ন করেছে।
এনবিআর সূত্রের বরাত দিয়ে কযেকটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বুধবার এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান সিআইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে এই পাঁচটি শিল্পগোষ্ঠীর গত কয়েক বছরের আয়কর, ভ্যাট, কাস্টমস সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে কর ফাঁকির তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া এসব গোষ্ঠীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের আমদানি রপ্তানি পর্যালোচনা করা হবে বলে জানান।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ অনেকের ব্যাংক হিসাব জব্দ ও তলব করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার এসব ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।
এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরও জানান, পর্যায়ক্রমে অভিযুক্ত এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আয়কর আইন, ২০২৩ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর অধীনে কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ফাঁকি দেওয়া কর উদ্ধারের পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মু’মেন বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন, সঞ্চয় অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সিআইসির বিশেষ অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।