প্রতিমা বিসর্জন আর বিষাদের সুরে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব, শারদীয় দুর্গাপূজা। রোববার দুপুর থেকে রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীর বিনাস্মৃতি স্নানঘাটে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। চারদিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পঞ্চমদিনে মর্ত্যলোক থেকে বিদায় নিলেন দেবী দুর্গা।
বিসর্জন উপলক্ষ্যে ঢাকার সদরঘাট ও এর আশপাশ এলাকায় পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, নৌ-পুলিশ ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ক্রাইম সিন টিম ও সোয়াট দল সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।
প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর পূজা কমিটির পক্ষ থেকে পুরান ঢাকার সদরঘাট টার্মিনালের কাছে বিনা স্মৃতি স্নান ঘাটে অস্থায়ী প্রতিমা বিসর্জন মঞ্চ নির্মাণ করা হয়। এই এলাকায় এবং বুড়িগঙ্গা নদীতে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদীতে টহল দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর পল্টন থানার পূজামণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে শুরু হয় বিসর্জন কার্যক্রম। এরপর একে একে ঢাকার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে শঙ্খ আর উলুধ্বনি, খোল-করতাল-ঢাকঢোলের সনাতনী বাজনার সঙ্গে দেবী বন্দনার গানের মধ্য দিয়ে প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে বুড়িগঙ্গা তীরের বিনাস্মৃতি স্নানঘাটে আসেন পুণ্যার্থীরা।
এর আগে তিথির কারণে শনিবার একই দিনে মহানবমী ও বিজয়া দশমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৬টা ১২ মিনিটের মধ্যে প্রথমে মহানবমীর কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা হয়। ওই পূজা শেষেই দশমীর লগ্ন হওয়ায় সকাল ৮টা ২৬ মিনিটের মধ্যে করা হয় বিজয়া দশমী বিহিত পূজা ও দেবীর দর্পণ বিসর্জন।
রাজধানীতে সকাল থেকেই বিসর্জনের প্রস্তুতির পাশাপাশি সিঁদুর খেলার আয়োজন শুরু হয়ে যায়। রোববার বেলা ১১টা থেকে মন্দিরে মন্দিরে বিবাহিত নারীরা অংশ নেন সিঁদুর খেলা ও মিষ্টি দানের আয়োজনে। তাদের স্বামী-সন্তানরা এবং অনেক ভক্ত শেষবারের মতো দেবীকে প্রণাম জানাতে মন্দিরে মন্দিরে সমবেত হন।
শনিবার নবমীর দিন হওয়ায়, রোববার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বিষাদ ও আনন্দ এক করে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেন তারা। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সাঙ্গ হলো দুর্গতিনাশিনীর বন্দনা।