টানা ষষ্ঠ দিনের মতো শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি করলেও দাবি আদায়ে সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এবার কর্মবিরতিতে যাচ্ছে দেশের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
মঙ্গলবার থেকে দেশের সব পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকবে। তবে জনগণের ভোগান্তি এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিক্ষোভকরীরা।
সোমবার (২৬ মে) বিকেলে জাতীয় শহীদ মিনারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তারা জানান, কর্মবিরতির পাশাপাশি শহীদ মিনারের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও।
শহীদ মিনারে এসে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ান উমামা ফাতেমা। তিনি সাত দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন এবং সরকারের প্রতি দ্রুত সমাধানের আহবান জানান।
এদিকে দাবি আদায় না হলে পরবর্তী কর্মসূচি আরও কঠোর হতে পারে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
সাত দফা দাবিগুলো হলো-
১. পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন-পীড়নের মাধ্যমে কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকারী, অত্যাচারী আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ।
২. ‘এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ’ অথবা দেশের অন্যান্য বিতরণ সংস্থার ন্যায় পুনর্গঠন।
৩. মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক এবং পৌষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ।
৪. মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল।
৫. গ্রাহক সেবার স্বার্থে লাইনক্রুসহ সব হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি আদেশ বাতিল এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের অবিলম্বে পদায়ন করতে হবে।
৬. জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা/শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়নের জন্য অতিদ্রুত জনবলের ঘাটতি পূরণ করতে হবে।
৭. পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত করতে হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান আন্দোলন বৈষম্যহীন একটি সুন্দর ও আধুনিক বিতরণ ব্যবস্থা বিনির্মাণের আন্দোলন, যেখানে সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর অংশগ্রহণ রয়েছে। পক্ষান্তরে আরইবি (বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড) আগের মতো সরকারের কাছে ভুল বার্তা দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারের এই যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে। অথচ এখানে হাজার হাজার পল্লী বিদ্যুতের কর্মী সমবেত হয়েছে স্বেচ্ছায় এবং স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে। যারা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের শোষণ, বৈষম্য, নির্যাতন ও নিপীড়ন থেকে মুক্তি চায়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের সঙ্গে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা দেশের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমাদের বিরোধ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সঙ্গে, যা সমাধানে আমরা এই কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয়েছি।