লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ব্রিটিশ ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস— এফসিওর দক্ষিণ এশিয়া, জাতিসংঘ এবং কমনওয়েলথবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড (তারিক) আহমেদ উইম্বলডন। সেখানে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ পুনর্ব্যক্ত করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
মুখোমুখি ওই সাক্ষাৎ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ টুইট করেন।
সচিত্র ওই টুইটবার্তায় তিনি বলেন, লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। বাণিজ্য-বিনিয়োগ, জলবায়ু এবং রোহিঙ্গাদের সমর্থনের ভিত্তিতে ব্রিটেন-বাংলাদেশ শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শেয়ার করে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, কমনওয়েলথের অংশীদার হিসেবে আমরা (আমাদের মধ্যকার বৈঠকে) অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছি।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধিরা বিশেষত ঢাকায় নবনিযুক্ত হাইকমিশনার সারাহ কুকপরবর্তী নির্বাচনকে যে কোনো মূল্যে অংশগ্রহণমূলক করার তাগিদসংবলিত একটি বার্তা অব্যাহতভাবে সরকারের সর্বোচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন লেভেলের সাক্ষাৎ-বৈঠক—এমনকি সর্বশেষ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকেও দিয়ে যাচ্ছেন।
ব্রিটেনের মতে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এখনই বিরোধী দল এবং ভিন্নমতের লোকজনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা, আশঙ্কা এবং অবিশ্বাস দূর করতে হবে। এমন কোনো ম্যাকানিজম বের করতে হবে, যাতে স্টেকহোল্ডাররা এটি বিশ্বাস করেন যে, নির্বাচনটি অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। সেই সঙ্গে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থাৎ সবার সমান সুযোগ থাকবে।
বিরোধীদের আস্থায় নেওয়ার এই উদ্যোগ সরকার কিংবা নির্বাচন কমিশন যে কেউ নিতে পারে। দায়িত্বশীল একাধিক কূটনৈতিক সূত্র সাম্প্রতিক জানিয়েছে, বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিয়ে শঙ্কিত ব্রিটেন।
এ জন্য হাইকমিশনার এবং সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা সফর করে যাওয়া ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধিদের প্রায় সবাই দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন দেখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। হাইকমিশনার তথা ব্রিটিশ সরকার মনে করে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার আগাম গ্যারান্টি পেলে ব্রিটেনের বড় বড় বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসবে, অন্যথায় বিদ্যমান বিনিয়োগে টান পড়া তথা দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়বে। সর্বশেষ গত মাসে অনুষ্ঠিত ঢাকা-লন্ডন ৫ম কৌশলগত সংলাপে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়। এমন নির্বাচন আয়োজনে যে কোনো ধরনের সহযোগিতার প্রস্তাবও দেয় ব্রিটেন।