আন্দামান সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপের পর বর্তমানে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে ঘূর্ণিঝড়। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘সিত্রাং’। শক্তি অর্জন করে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে এটি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ দেশের সব সমুদ্রবন্দরকে ৪ নাম্বার হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কায় সোমবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। কক্সবাজার, মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৪ নাম্বার হুঁশিয়ারি সঙ্কেত জারি করা হয়েছে।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ায় সেন্টমার্টিনে বেড়াতে যাওয়া ৪ শতাধিক পর্যটকের মধ্যে প্রায় সবাই কক্সবাজার পৌঁছেছেন। রাত ৯টার দিকে জাহাজটি কক্সবাজারে এসে পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন কর্ণফুলী জাহাজের কক্সবাজারের ইনচার্জ হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর।
তিনি বলেন, সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সেন্টমার্টিনে যেসব পর্যটক গেছেন, সবাই কর্ণফুলী জাহাজের যাত্রী। সাগর উত্তাল হলেও পর্যটকদের কক্সবাজারে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দ্বীপের তিন শতাধিক নৌকা, ট্রলার, স্পিডবোট জেটি ঘাটে নোঙর করা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
সেন্টমার্টিনের সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমান জানান, সর্তক সঙ্কেতের কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। প্রায় সব পর্যটক কর্ণফুলী জাহাজে করে চলে গেছেন। অনুমতি নিয়ে ১০ জনের মতো পর্যটক দ্বীপে থেকে গেছেন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিনে সকাল থেকে ঝড়োহাওয়া বইতে শুরু করেছে। উত্তাল জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে জাহাজ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করেছেন প্রশাসন। যেসব পর্যটক দ্বীপে অবস্থান করছেন, তাদের জাহাজে করে কক্সবাজার ফিরে যেতে অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জাহাজ চলাচল শুরু হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে স্থানীয় লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি রোধে সাইক্লোন শেল্টার ও বহুতল ভবনগুলো খোলা রাখার জন্য ইউনিয়ন পরিষদকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দ্বীপের মানুষের জন্য শুকনা খাবার, পানিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ জানান, ঘূর্ণিঝড় বিষয়ে সবধরনের সতর্কতা ও ক্ষয়ক্ষতি রোধে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা ও পৌরসভার পক্ষ থেকে মেডিকেল টিম গঠন ও সার্বিক বিষয়ে তদারকির জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে।