চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান। আগামী ২৯ আগস্ট তিনি অবসরে যাবেন।
বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (শুল্ক-১ শাখা) থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মকিমা বেগম প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মতিউর রহমান অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ-এ সংযুক্ত এর চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ২৯ আগস্ট সরকারি চাকরি হতে অবসর (ঐচ্ছিক) দেওয়া হলো। এ সময়ে অবসরজনিত আর্থিক সুবিধা (অবসর-উত্তর ছুটি, লাম্পগ্র্যান্ট এবং পেনশন) ব্যতীত অবসর (ঐচ্ছিক) দেওয়া হলো।
কোরবানির ঈদে ঢাকার সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ১২ লাখ টাকার একটি ছাগল কিনে আলোচনার জন্ম দেন মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত। এছাড়া কেনেন আরও কয়েক লাখ টাকার গরু।
এরপর থেকে মতিউর রহমানের ছেলের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন; মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
এ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠা শুরু হওয়ার পরেই মুশফিকুর রহমান ওরফে ইফাতকে নিজের ছেলে হিসেবে অস্বীকার করেন মতিউর রহমান।
২৩ জুন মতিউরকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়।
এদিকে দুদকের অনুসন্ধানে মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা বহু জমি এবং ঢাকায় চারটি অ্যাপার্টমেন্ট (ফ্ল্যাট) জব্দের আদেশ দেয় আদালত।
পাশাপাশি মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা ১১৬টি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা ১৩ কোটি ৪৪ টাকাও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয় আদালত। এছাড়াও মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা ২৩টি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ করারও আদেশও আসে।
মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ ও তার ছেলে আহমদ তৌফিকুর রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় ঢাকার আদালত।
দুদক জানায়, মতিউরের বিরুদ্ধে হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
ছাগলকাণ্ডের আলোচিত মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরাই যে কেবল অঢেল সম্পদ গড়েছেন তা নয়, বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক বনে গেছেন সাবেক এই রাজস্ব কর্মকর্তার বান্ধবী আরজিনা খাতুনও। তিনিও এনবিআরের কর্মকর্তা।
গত ১০ জুন আরজিনার দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের খতিয়ান তুলে ধরে দুদকে অভিযোগ জমা দেন এক ব্যক্তি। তাতে বলা হয়, মিথ্যা তথ্য দিয়ে পণ্য আমদানি, মানি লন্ডারিং, স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন আরজিনা।