নির্বাচনের পরদিন আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আগামীকাল ও পরশু বিএনপি গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করবে। এরপর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগের একচেটিয়া ভোট বর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ মন্তব্য করেন মঈন খান।
মঈন খান বলেন, ডামি পর্যবেক্ষকেরা নির্বাচনের সাফাই গাইলেও জনগণ একচেটিয়াভাবে এই নির্বাচনকে বর্জন করেছে। সাত জানুয়ারি একটি প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে।
নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, জনগণের ভোটের সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। সাত জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দিতে না গিয়ে জনগণ বিএনপির আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেও বলে দাবি করেন তিনি। বহু নির্বাচনী কেন্দ্রে একটি ভোটও পড়েনি।
মঈন খান আরও বলেন, রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহার, ডামি নির্বাচন কমিশন, ডামি ভোটার, ডামি পর্যবেক্ষক দিয়ে সরকার সাফাই গাইলেও দেশের জনগণ একচেটিয়াভাবে এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। হাতেগোনা কিছু ভোট করেছে। খাগড়াছড়িতে ১৯টি কেন্দ্রে ১টি ভোটও পড়েনি, কিছু কেন্দ্রে মাত্র ১০-১২টি ভোট পড়েছে। এই কমিশন ভুয়া প্রহসনের নাটকের নির্বাচন করেছে।
তিনি আরও বলেন, নিজেদের মধ্যে কৃত্রিম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেও ভোটার আনতে পারেনি আওয়ামী লীগ। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনির আওতাভুক্তদের হুমকি দিয়েও লাভ হয়নি। লাভ হয়নি ডামি লাইন বা শিশুদের ভোটার বানিয়ে।
মঈন খান বলেন, বর্তমান একদলীয় বাকশালি সরকারের অধীনে কোনওভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারেনা। ধারাবাহিকভাবে মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেয়ায় জনগণ নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। পুরো সিস্টেমকে ধ্বংস করেছে সরকার। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ নির্বাহী বিভাগের হাতে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভোট গ্রহণের হার নিয়ে বক্তব্য হাস্যকর। কমিশন আগেই কত সংখ্যক ভোট পড়েছে তা নির্ধারন করে রেখেছছিলো। এই নির্বাচনের সবই ডামি, ডামি প্রার্থী, ডামি ভোটার, ডামি পর্যবেক্ষক। ভোট বর্জন করে জনগণ স্পষ্ট করেছে এই নির্বাচন ভুয়া।
৭১ দিন পর গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন৭১ দিন পর গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন
নতুন করে নির্বাচন করার দাবী জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তারা নতুন করে নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। ১২ কোটি ভোটারের দাবি এখন একটাই, এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে এবং নতুন করে নির্বাচন করতে হবে। এই সরকার, এই সংসদ, এই নির্বাচন কমিশন বহাল রেখে কোনদিন বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, মানুষ এই সরকারের পরিবর্তন চায় কারণ এই সরকার জনগণের কথা ভাবেনা। এই অবৈধ, অসাংবিধানিক সরকারের ব্যবস্থাপনাকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশে বিদেশে তা স্পষ্ট। বন্দুকের নলে ক্ষমতা দীর্ঘ করতে চাইলে সারাবিশ্বের মানুষের কাছে অবৈধ, অসাংবিধানিক হিসেবে চিহ্নিত হবে এই সরকার।
বিকেলে সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রীবিকেলে সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী
জনগণ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সংগ্রাম অব্যহত রাখবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লগি-বৈঠার রাজনীতিতে মানুষ আর বিশ্বাস করেনা। মানুষ এই স্বৈরাচারী অবস্থার পরিবর্তন ঘটাবে। উন্নয়নের প্রতি মানুষের আস্থা থাকলে ভোটাররা কেন্দ্রে গেলোনা কেনো? দেশের জনগণ শুধু ভোট নয়, একদলীয় বাকশালকে বর্জন করেছে।
তিনি বলেন, রাজপথে আছি, রাজপথে থাকবো যতোদিন না জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেতনতার লক্ষ্যে মঙ্গলবার থেকে বুধবার গণসংযোগ করবে বিএনপি।