সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর ভিসানীতি নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন অ্যাক্ট প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেটা বলেছে, বাংলাদেশের মিশনকে জেনারেল আজিজের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। জেনারেল আজিজের বিষয়ে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সেটা ভিসানীতির প্রয়োগ নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন অ্যাক্টের প্রয়োগ। এটা নিয়ে আমি আর কিছু বলবো না। এটা নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও কথা বলেছেন। আমরা এটুকুই জানি, এটুকুই বললাম।
দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে এনে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদসহ তার পরিবারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আজিজ আহমেদের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের বিশ্বাসকে ক্ষুন্ন করতে ভূমিকা রেখেছে।
এতে বলা হয়, তিনি তার ভাইকে দেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহযোগিতা করেন। এটি করতে গিয়ে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে দুর্নীতিতে জড়ান।
সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপিসহ সমমনাদের অবিরাম মিথ্যাচার, টিআইবির অপপ্রচার ও নামিদামি বুদ্ধিজীবীদের মিথ্যাচারে উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। আরও কিছু নামিদামি বুদ্ধিজীবী আছেন, তারাও মিথ্যাচার, অপপ্রচার করে মানুষের আগ্রহ নষ্ট করেছেন ভোটের ব্যাপারে।
কাদের বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এবং আমাদের বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয় এটা বলা যাবে না। এখানে কিছু সংঘাত, প্রাণহানি ঘটে। যদিও আমাদের ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ক্যাজুয়ালটি নেই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভোটাররা কেন্দ্রে আসেননি এটা যদি বলেন, এটা তো স্থানীয় নির্বাচন, ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে ছিল ৪২ শতাংশ। বিএনপি নেতাদের বলব, ১৫ ফেব্রুয়ারির যে নির্বাচন তাতে বিবিসি বলেছিল পাঁচ শতাংশ ভোট পড়েছে। নির্বাচন কমিশন ২১ শতাংশ। আপনাদের জাতীয় নির্বাচনে ২১ শতাংশও যদি ধরি তাহলে ৩০ শতাংশ এটা কম কীসের?
তিনি আরও বলেন, যা ভোট পড়েছে সেটাকে খুব বেশি ভালো বলা যাবে না। বলবো মোটামুটি ভালো হয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে টার্ন আউট নিয়ে আমার মনে হয় বেশি কথার বলার প্রয়োজন নেই।
বাকশালে জিয়াউর রহমান যোগদান দেননি বলে বিএনপির দাবিকে ‘মিথ্যাচার’ আখ্যা দিয়ে ছ্যালেঞ্জ ছুড়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জিয়াউর রহমান বাকশালের সদস্য ছিলেন এর তথ্য প্রমাণ প্রয়োজনে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।