মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

আন্দোলনের ফল কি আসবে? কৌশলে আন্দোলন করতে চাই বিএনপি

বছর পেরোলেই নির্বাচনী আয়োজনের পালে লাগবে জোর হাওয়া। রাজনীতির মাঠ এরই মধ্যে বেশ উত্তপ্ত। সরকারিদল আওয়ামী লীগের আত্মবিশ্বাস এখনো অটুট। টানা ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি প্রায় দিশেহারা। তবে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া। সময়ের সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে জামায়াত। আর জাতীয় পার্টি সরকারের ঘরে অবস্থান করলেও আছে টালমাটাল অবস্থায়।

নির্বাচন উপলক্ষ্য হলেও বিচ্ছিন্ন ইস্যু নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি। সম্প্রতি রাজপথে তাদের অবস্থান কিছুটা শক্তপোক্ত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সমসাময়িক ইস্যুতে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ বেশ স্বতঃস্ফূর্ত। কখনো-সখনো আগ্রাসীও। তবে বিএনপি এবার আন্দোলনে মারমুখী না হয়ে কিছুটা কৌশলী। দলটি রাজধানী ঢাকাকে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু করতে মরিয়া।

বিএনপির একটি সূত্র বলছে, রাজধানীকে ১৬টি পয়েন্টে ভাগ করা হয়েছে। এই পয়েন্টগুলো থেকেই নিয়মিত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। হচ্ছেও তাই। শুধু নয়াপল্টন থেকে আন্দোলন করলে রাজধানীকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। একইভাবে ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

তবে বিএনপি এমন কৌশলী আন্দোলনে গেলেও সরকার মাঠ উন্মুক্ত রাখতে নারাজ। পুলিশ ও সরকারিদল মিলে মারমুখী অবস্থান নিয়ে বিএনপিকে মাঠেই দাঁড়াতে দিচ্ছে না। রক্তপাতও ঘটছে।

বিএনপির আন্দোলন, আন্দোলনের ফলাফল আর সরকারের অবস্থান নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দলের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলা হয় জাগো নিউজের পক্ষ থেকে। কথা বলা হয় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধির সঙ্গেও।

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সাবেক মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সরকার যে ভয়ে আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ভীত না হলে এভাবে শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি করতে পারে! মানুষ মাঠে নামলেই সরকার কাঁপছে। পুলিশ, সরকারের বাহিনী এক হয়ে হামলে পড়ছে।’

আন্দোলনে ফলাফল কী আসবে অথবা বিএনপি ক্ষমতায় আসবে কি না এই হিসাব মুখ্য নয়। একটি অগণতান্ত্রিক সরকারের পতনের জন্য আমাদের এই আন্দোলন। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা মানুষের মুক্তির পথ দেখতে পাচ্ছি।’

এবারের আন্দোলনের ধরন নিয়ে জ্যেষ্ঠ এই রাজনীতিক বলেন, ‘বিএনপি কৌশলী আন্দোলন করছে, এটি আমি মনে করছি। তবে কৌশল তো আন্দোলনের অংশ। আমরা আগেও ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলন করেছি। সরকার মানুষের অধিকার খর্ব করেছে। আবারও ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে মানুষ আন্দোলনে নামছে। আমরা আন্দোলন করছি দেশ-জাতিকে রক্ষার জন্য।’

এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে- এমনটি উল্লেখ করে বলেন, ‘অন্য কোনো পথ দেখার অপেক্ষা নেই। নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমরা মাঠে নেমেছি। যারা এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন, তারাই আমাদের শক্তি। আমরা জুলুমবাজ সরকারের সব বিরোধী শক্তিকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। মানুষের সফলতা আসবেই। হয়তো সময় লাগতে পারে।’

আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। প্রতিমন্ত্রী, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। তিনি অবশ্য বিএনপির এবারের আন্দোলনের ফলাফলকেও শূন্যের খাতায় রাখতে চান।

তিনি বলেন, ‘আন্দোলন আর রাজনৈতিক কর্মসূচি এক বিষয় নয়। একটি রাজনৈতিক দল তার কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করার পর তা আন্দোলনে রূপ নেয়। বিএনপি সেটি কখনই করতে পারেনি। আমরা ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন দেখেছি। এটিকে কেউ আন্দোলন বলতে পারে না। মূলত গণবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে গ্রেনেড হামলা, হত্যা, জ্বালা-পোড়াও। এমন আন্দোলনে কোনো ফল আসে না। কোনো কৌশল অবলম্বন করেও লাভ হয় না।’

বিএনপির চলমান আন্দোলনে বিশেষত্ব দেখছেন না বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। বামপন্থি এই রাজনীতিক বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন আমাদের দেখার সময় নেই। কারণ বিএনপি আর আওয়ামী লীগকে আলাদা করে দেখার কিছু নেই। আমি সব সময় বলে আসছি, বিএনপি হচ্ছে আপদ, আর আওয়ামী লীগ হচ্ছে বিপদ। তারা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এসব আন্দোলনে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না।

আমরা নিজেরাই আন্দোলন করছি। মুক্তবাজার অর্থনীতি মানুষের অধিকার গিলে খাচ্ছে, এই ধারা থেকে বের হওয়ার জন্য আমরা লড়াই করছি। এই লড়াইয়ে আমরা ভোট, নির্বাচনও গুরুত্ব পাচ্ছে। মানুষ জেনে গেছে, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। দলীয় সরকারের পরিবর্তে তদারকি একটি সরকার দরকার, যারা নিরপেক্ষ নির্বাচন করার সক্ষমতা রাখে। এই সরকার কবে পদত্যগ করবে আর নির্দলীয় সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন করবে সেজন্য লড়াই করে যাচ্ছি। ক্ষমতায় কে গেলো সেটা বড় কথা নয়। মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে সেটাই বড় বিষয়’ যোগ করেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ, বীর বিক্রম। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। সাবেক মন্ত্রী। তিনি অবশ্য আন্দোলনের ফলাফল নিয়ে সহসাই উত্তর দেননি। এই রাজনীতিক বলেন, ‘আন্দোলনের ফলাফল অঙ্কের মতো নয় যে দুইয়ে দুইয়ে চার হবে। আমরা সরকার পতনের জন্য আন্দোলন করছি। হয়তো পতন ঘটেও যেতে পারে। কিন্তু হবেই এমনটি জোর বলা যায় না।’

‘সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি এখন এককভাবে মাঠে অবস্থান করেছে। আমরা অন্য দল এবং সাধারণ মানুষকে পাশে চাইছি। গণমানুষ আমাদের আন্দোলনে যেদিন যুক্ত হবে, সেদিনই সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে।’

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!