বুধবার , ১৬ আগস্ট ২০২৩ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. London Mirror Specials
  2. অন্যান্য
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খুলনা
  6. খেলা
  7. চট্রগ্রাম
  8. জেলার খবর
  9. ঢাকা
  10. তথ্য-প্রযুক্তি
  11. প্রবাসের কথা
  12. বরিশাল
  13. বাংলাদেশ
  14. বিনোদন
  15. ব্যাবসা-বাণিজ্য

আমাকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রতিবেদক
Newsdesk
আগস্ট ১৬, ২০২৩ ১১:৩২ অপরাহ্ণ

আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলোকে নিয়ে নানা খেলা চলছে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই এলাকাটাকে নিয়ে নানা ধরনের খেলার একটা চক্রান্ত। যেহেতু আমি জানি, আমি বুঝি যে কীভাবে আমাকে ক্ষমতা থেকে সরাবে। তাদের কিছু কেনা গোলাম আছে, পদলেহনকারী আছে, তাদের বসিয়ে এই জায়গাটাকে নিয়ে খেলবে। সেটাই হচ্ছে প্রচেষ্টা। সেটা আমি ভালোভাবে বুঝতে পারি।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি তাদের চোখের মণি। তাদের নিয়ে ক্ষমতায় বসাতেই হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিক অবস্থার দিক দিয়ে বাংলাদেশের একদিকে ভারত মহাসাগর অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগর। এদিকে আমাদের বে অব বেঙ্গল। এর গুরুত্ব অনেক বেশি। প্রাচীন যুগ থেকে এ জায়গাতে সকল ব্যবসা-বাণিজ্য চলে আসছে। ভারত মহাসাগরের যতগুলো দেশ আছে, কারো সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্ব নেই। সম্পূর্ণ নিষ্কণ্টক একটা যোগাযোগ পথ। এই জলপথে আন্তর্জাতিকভাবে সবচেয়ে নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহন হয়।

খালেদা জিয়া যখন ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল তখন তাদের নির্বাচনের চেতনা কোথায় ছিল? জেনারেল এরশাদ যখন ৪৮ ঘণ্টা রেজাল্ট বন্ধ করে দিয়ে ফলাফল ঘোষণা করল, সেটা নিয়ে তাদের উদ্বেগ তো আমরা দেখিনি। হঠাৎ এবার নির্বাচন নিয়ে তারা  যেন খুব বেশি উতলা হয়ে পড়ল!

তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নাম দিয়ে, নির্বাচনের নাম দিয়ে, নানা নাম দিয়ে আমাদের দেশে এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়, যাতে করে ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরের জায়গাটা তারা ব্যবহার করতে পারে। এটা ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশে আক্রমণ করা এবং দেশগুলোকে ধ্বংস করা, এটাই হচ্ছে কারো কারো উদ্দেশ্য। সে উদ্দেশ্য নিয়েই তাদের এত তালবাহানা। এই এলাকাটাকে নিয়ে নানাভাবে খেলার চক্রান্ত চলছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমরা গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করেছি, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি। বাংলাদেশের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নতি হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ আজ এগিয়ে যাচ্ছে, দারিদ্র্যের হার ৪১ থেকে ১৮ ভাগে নামিয়ে এনেছি। এরা বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

বাংলাদেশের দুর্ভাগ্যের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে তাদের (পশ্চিমারা) কাছ থেকে মানবাধিকারের কথা আমাদের শুনতে হয়। আমাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল? যেখানে আমার মা-বাবার হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। হত্যার বিচার চেয়ে মামলা করার অধিকার ছিল না। ১৫ আগস্ট আমাদের জাতীয় জীবনে কত বড় একটা দুর্ভাগ্যের ক্ষত চিহ্ন রেখে গেছে, যে মুক্তিযুদ্ধের জন্য লাখো মানুষ জীবন দিয়েছে, সেই মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত আদর্শ, সমস্ত চেতনা, সবকিছু পরিবর্তন করে ফেলেছিল তারা।

যেসব দেশ খুনিদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে, তারা যখন আমাদের কাছে আসে মানবাধিকারের কথা বলে, তারা নির্বাচনের কথা বল, স্বচ্ছতার কথা বলে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে খুব উতলা হয়ে পড়েছে, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, ২০০১ সালের নির্বাচনে যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর নির্বিচারে অত্যাচার কারা করল? কত মানুষকে খুন করেছে? হাত কেটে, চোখ তুলে নিয়েছে, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, পুড়িয়ে ফেলেছে, তখন তাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল?

তিনি বলেন, যেসব দেশ খুনিদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে, তারা যখন আমাদের কাছে আসে মানবাধিকারের কথা বলে, তারা নির্বাচনের কথা বল, স্বচ্ছতার কথা বলে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে খুব উতলা হয়ে পড়েছে, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, ২০০১ সালের নির্বাচনে যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর নির্বিচারে অত্যাচার কারা করল? কত মানুষকে খুন করেছে? হাত কেটে, চোখ তুলে নিয়েছে, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, পুড়িয়ে ফেলেছে, তখন তাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল? সেই নির্বাচনে আমাদের হারার কথা ছিল না, আমাদেরকে জোর করে হারানো হয়েছিল।

সরকারপ্রধান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ৩০ বছর ধরে যে সংঘাত ছিল, আমি সরকারে আসার পর সেখানে শান্তি ফিরিয়ে আনি। সেখানে এখনও নানা রকম অশান্তি সৃষ্টির প্রচেষ্টা চলছে। যেহেতু আমি জানি, আমি বুঝি, আমাকে কীভাবে ক্ষমতা থেকে সরাবে, তাদের কিছু কেনা গোলাম আছে, তাদের বসিয়ে এ জায়গাটা নিয়ে খেলবে, এটাই তাদের প্রচেষ্টা। সেটা আমি ভালোভাবে বুঝতে পারি। যারা দেশপ্রেমী, তাদের সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। কারণ, বাংলাদেশের মানুষের ক্ষতি করে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করি না।

তিনি আরও বলেন, আমরা আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। খালেদা জিয়ার আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন না। ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে তারা নির্বাচন করার চেষ্টা করেছে। তখন এসব চেতনা আমরা দেখিনি। এত কথা শুনিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন মনে হয় তাদের পছন্দ না। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাটাই পছন্দ না। আজকের ডেমোক্রেসির কথা বলে, ডেমোক্রেসি কী? আমি আমেরিকা যখন গিয়েছিলাম, তখন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে আমার কথা হয়। তখন জিজ্ঞেস করেছিলাম, আমি একটা লেখা দেখে এসেছি, যেখানে লেখা, গর্ভমেন্ট অব দ্যা পিপল বাই দ্যা পিপল, ফর দ্যা পিপল। আমি একটা দেশ থেকে এসেছি, যেখানে একটা গর্ভমেন্ট অব দ্যা আর্মি, বাই দ্যা আর্মি, ফর দ্যা আর্মি। আপনারা তাদের সাপোর্ট দেন কীভাবে? আপনাদের গণতন্ত্র কি আটলান্টিকের পার পর্যন্ত থাকে? আটলান্টিক পার হলেই আপনাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা কি বদলে যায়? একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাদের দেশে এত নেতাকর্মীদের হত্যা করল, শুধু একবার নয় বারবার আমাদের মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। আজকে তাদেরকেই ক্ষমতা বসাতে হবে?

গণতন্ত্রের নাম দিয়ে, নির্বাচনের নাম দিয়ে, নানা নাম দিয়ে আমাদের দেশে এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়, যাতে করে ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরের জায়গাটা তারা ব্যবহার করতে পারে। এটা ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশে আক্রমণ করা এবং দেশগুলোকে ধ্বংস করা, এটাই হচ্ছে উদ্দেশ্য।

তিনি বলেন, ক্ষমতায় এসেই জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর হাজার হাজার অফিসার, সৈনিককে হত্যা করেছে। তার বিরুদ্ধে কোনো ক্যু হলে, কোনো বিচারই হয়নি, বিচারের রায়ের আগেই সে ফাঁসি দিয়েছে। এমনও দিন গেছে একদিনে ১০ জন করে ফাঁসি দিয়েছে। জেলে গেলেই ফাঁসি। সবাইকে তো জেলে নিয়েছে তা না, বিভিন্ন ফায়ারিং স্কোয়াডে হত্যা করেছে। বিমান বাহিনীর ৬ শতাধিক অফিসারকে হত্যা করেছে। সেনাবাহিনীর দুই হাজারের মতো মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে হত্যা করেছে। এভাবেই বাংলাদেশ চলছিল। বাংলাদেশের মানুষের কি অধিকার ছিল? না ছিল ভোটের অধিকার, না ছিল কথা বলার অধিকার। ২১টা বছর এদেশে মানুষ এভাবেই চলে।

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়ার রাষ্ট্র পরিচালনার পথ অনুসরণ করে ক্ষমতায় আসে এরশাদ। এরশাদের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করি। তারপর খালেদা জিয়ার সেই জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আসল। জামায়াতের উত্থান জিয়াউর রহমানের হাতেই। জামায়াত ছিল যুদ্ধাপরাধী, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, জামায়াতের লোকজনই পাকিস্তানি বাহিনীদের গ্রামের পথ দেখিয়ে গ্রামে নিয়ে যায়। মা বোনকে ধরে তাদের হাতে তুলে দেয়। স্বাধীনতার পর আমাদের সংবিধানে জাতির পিতা যুদ্ধাপরাধী বিচারের ব্যবস্থা করেছিলেন, তাদের কোনো ভোটের অধিকার ছিল না। তাদের দল করার অধিকারও ছিল না। তারা অনেকে পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল। কেউ বিদেশে চলে যায়। আর যারা দেশে ছিল তারা সর্বহারা পার্টিতে মিশে যায়। ছাত্রলীগ ভেঙে জাসদের সৃষ্টি হয়, ওরা জাসদের সঙ্গে যুক্ত হয়। যতদিন পিতা বেঁচে ছিলেন জাসদ যত প্রোগ্রাম করত, বড় বড় মিটিং করত, তাদের টাকা পয়সার অভাব হত না। যেই ৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যা করা হলো তখন তাদের গুরুত্ব কমে গেল। তখন তাদের লোকও নেই, অর্থ নেই।

তিনি বলেন, ৯১ সালে আমরা আন্দোলন করলাম। সেই নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দল সরকার গঠনের জন্য মেজরিটি পায়নি। তখন প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন সাহেব তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান। তিনি আমাকে ডেকে বলেছিলেন যে, জামায়াত এবং জাতীয় পার্টি আপনাকে সমর্থন দেবে, আপনি সরকার গঠন করতে পারেন। আমি ওনাকে বিনয়ের সঙ্গে বলেছিলাম, আমি এভাবে সরকার গঠন করতে চাই না। তিনি বলেছিলেন, আপনি তো বাংলাদেশে প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হবেন। তখন বলেছিলাম যে আমার এ রকম লোভ নেই। আমি যেহেতু মেজরিটি পাইনি সরকার গঠন করার মতো তাই সরকার গঠন করব না। আপনি অন্য কাউকে ডাকেন, তারা করবে। তখন খালেদা জিয়া জামায়াতের সমর্থন নিয়ে ৯১ সালে ক্ষমতায় আসে।

ক্ষমতায় আসলেই খালেদা জিয়ার আসল রূপ বের হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট যেদিন আমরা শোক পালন করি। সেই ১৫ আগস্ট হয়ে গেল তার একটা মিথ্যা জন্মদিন। কারণ তিনি কোনোদিনও প্রমাণ করতে পারবেন না তার জন্মদিন ১৫ আগস্ট। যে একবার মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন সেখানেও তার জন্ম ১৫ আগস্ট নয়। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ফার্স্ট লেডি হিসেবে তার পাসপোর্টেও ১৫ আগস্ট নয়। ৯১ সালে ক্ষমতায় আসার পর ১৫ আগস্ট হয়ে গেল? তখন অনেক পা চাটা দল বড় বড় কেক বানিয়ে নিয়ে যেত। তার যত বয়স তত বড় কেক। এ রকম উপহার দেওয়া হতো। এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা আমরা দেখেছি।

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত