জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নির্বাচনী পোস্টার নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত পোস্টারে ‘জাতীয় পার্টির মনোনীত ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত’ লেখা নিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। এ নিয়ে নির্বাচনী এলাকা করিমগঞ্জ ও তাড়াইল উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ। কারণ ওই এলাকায় আওয়ামী লীগেরই চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
চুন্নু কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে সমঝোতার প্রার্থী হয়েছেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে সমঝোতা হয়। ফলে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, সেই ২০০৮ সাল থেকে চুন্নু নৌকায় উঠে সংসদে যাচ্ছেন। কিন্তু এবার সমঝোতার কারণে নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার করলেও রয়েছেন চারজন আওয়ামী পরিবারের স্বতন্ত্র প্রার্থী। সমঝোতার কারণে আওয়ামী লীগ এই আসনে দলীয় প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। সমঝোতাকে আওয়ামী লীগের সমর্থন মনে করার কারণ নেই।
প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা নাসিরুল ইসলাম আওলাদ বলেছেন, মুজিবুল হক চুন্নুকে এই আসনে আওয়ামী লীগ ছাড় দিয়েছে, সমর্থন দেয়নি। কাজেই পোস্টারে ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’ লেখাটা অন্যায় হয়েছে। তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক মোতাহারও বলেছেন, ‘চুন্নুকে আওয়ামী লীগ সমর্থন দেয়নি। তার পক্ষে আমরা নির্বাচনী কাজও করছি না। আমরা অপেক্ষায় আছি, আওয়ামী লীগের চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে আলোচনা করে একজন প্রার্থী হলে আমরা তাকে নিয়ে মাঠে নামবো।’
এদিকে ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিউ ইয়র্ক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহফুজুল হক বলেছেন, ‘বিষয়টি নিয়ে দলের অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করবো।’
এই আসনে আওয়ামী পরিবারের অন্য তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মেজর (অব.) মো. নাসিমুল হক (কাঁচি), কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার গোলাম কবীর ভূঁইয়া (কেটলি) ও মো. রুবেল মিয়া (ট্রাক)। গোলাম কবীর ভূঁইয়া জানিয়েছেন, এই আসনটি জাতীয় পার্টির কবল থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য স্বতন্ত্র চারজনের মধ্যে থেকে একজনকে রেখে বাকিরা বসে যাবেন। এরকম একটা আলোচনা নিজেদের মধ্যে চলছে।