জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি হতে পারে; কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নয়। কারণ, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কাজ করছে, তারা জনগণকে মুক্তি দেয়নি, জনগণের জন্য কিছুই করেনি। তারা জাতিকে বিভিন্নভাবে বিভাজন করে রেখেছে। আওয়ামী লীগ করলে সব ঠিক। আর না করলে বেঠিক।
শনিবার দুপুরে শহরের টাউন হলে লক্ষ্মীপুর জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশের সবাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল। কেউ মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, স্বাধীনতার বিপক্ষে কিছু লোক ছিল। বর্তমান মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় এমন মানুষের নাম রয়েছে, যাদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধ করেননি। দেশ ভয়াবহ দুরবস্থার মধ্যে আছে। বিশাল খাদ্যভাণ্ডার কিনারায় এসে পৌঁছেছে। যেকোনো সময় পড়ে যাবে। সরকার দেউলিয়া হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন লোকের হাতে দিয়ে খালি করে ফেলেছে। গণতন্ত্রের নামে আওয়ামী লীগতন্ত্র বানিয়েছে তারা। রাজতন্ত্র মানে রাজার তন্ত্র। গণতন্ত্র মানে জনগণের সরকার, জনগণ সরকার গঠন করবে। এখন আওয়ামী লীগ রাজতন্ত্র কায়েম করেছে। উন্নয়নের নামে লুটপাট করছে।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু এমপি। তিনি বলেন, শতভাগ বিদ্যুতায়ন করে ফেলেছে- তারা বলে। এখন সেই বিদ্যুৎ কই? নিজস্ব কিছু লোককে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ দিল। তাদের বসানোর শর্তই ছিল বিদ্যুৎ না দিতে পারলেও সমস্যা নেই। বসে বসে চুরি করবা। আজ জনগণ বিদ্যুৎ পায় না। ৩২ বছরের দুর্নীতি, দুঃশাসন, অপশাসন, বিচারহীনতা, অর্থ পাচার, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির জন্য দায়ী যারা, তারা আন্দোলনের নামে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র করেছিল।
প্রায় নয় বছর পর জাতীয় পার্টির অন্যতম শক্তিশালী ইউনিট লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় রায়পুরের সাবেক এমপি মোহাম্মদ নোমান ও সদরের সাবেক এমপি মোহাম্মদ উল্লাহসহ তিনজন সভাপতি এবং সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান ও জেলার নেতা এম আরিফুর রহমানসহ তিনজন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকায় গিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটি ঘোষণা দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলা জাতীয় পার্টির প্রতিটি ইউনিটের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা ও উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে রায়পুর ও সদরের প্রতিটি ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা ফেসবুকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের লেখা ও ব্যানার ফেস্টুনের পোস্ট দিয়েছেন। পিছিয়ে ছিল না সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সম্মেলনে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছেন। সব বিভেদ ভুলে দলকে আরও শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, লে. জে. মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) সাবেক এমপি মোহাম্মদ নোমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বোরহান উদ্দিন মিঠুসহ জাতীয় পার্টি ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।