লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহ প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে ইহুদিবাদীদের বিমান হামলায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
নাসরুল্লাহর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এবং গাজা, ফিলিস্তিন, লেবানন ও এর জনগণকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে হিজবুল্লাহ। খবর বিবিসি’র।
এর আগে, শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র অবিচাই আদ্রে দাবি করেছিলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে নির্মূল করা হয়েছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী দাবি করে, শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে হিজবুল্লাহ-নিয়ন্ত্রিত দক্ষিণ শহরতলির দাহিয়েহ এলাকায় ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। ওই এলাকার একটি আবাসিক ভবনের নিচে গোষ্ঠীটির ভূগর্ভস্থ সদর দপ্তরে চালানো ‘লক্ষ্যনির্ভর হামলায়’ নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তাদের হামলায় শুধু হিজবুল্লাহ প্রধানই নন বরং ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীটির দক্ষিণ ফ্রন্টের কমান্ডারসহ অন্যান্য সিনিয়র নেতাও নিহত হয়েছেন।
বিগত ৩২ বছর ধরে ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন নাসরুল্লাহ। এই সময়ে হিজবুল্লাহ একটি আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। ফলে তার মৃত্যু শুধু হিজবুল্লাহর জন্য নয়, ইরানের জন্যও একটি বিশাল আঘাত হিসেবে দেখা হবে। ইরানের বিপ্লবী গার্ড ১৯৮২ সালে এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। সংগঠনটি মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তেহরানের প্রভাব ছড়িয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার হিজবুল্লাহর কমান্ড সেন্টারে আক্রমণের পর শনিবার নতুন করে আরও বিমান হামলা চালানো হয়। এই হামলা ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে চলমান সংঘাতকে আরও তীব্র করেছে এবং এই অঞ্চলে ব্যাপক যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
১৯৯২ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে হিজবুল্লাহর প্রধান হন নাসরুল্লাহ। এর আগে, ইসরাইলের এক হেলিকপ্টার হামলায় নিহত হন তার পূর্বসূরি আব্বাস আল-মুসাবি। হিজবুল্লাহ প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর মুসাবি হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া ছিল হাসান নাসরুল্লাহর প্রথম কাজ। সে অনুযায়ী ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে রকেট হামলার নির্দেশ দেন তিনি।