নেতা-কর্মীদের সাহস নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার অজ্ঞাতস্থান থেকে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এই বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করতে কাজ করছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
তিনি অভিযোগ করেন, আগামী নির্বাচন একতরফা করতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করার জন্য টার্গেট করে বিএনপির তরুণ নেতাদের তুলে নেয়া হচ্ছে।’
বুধ ও বৃহস্পতিবার তৃতীয়বারের মতো অবরোধের ঘোষণা দেয় সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি। তাদের ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার সকাল ছয়টা থেকে শুক্রবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি চলবে।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডাকে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে সেই সমাবেশ থেকে ২৯ অক্টোবর হরতাল ডাকে দলটি।
একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর সারা দেশে অবরোধ করে তারা। আলাদা কর্মসূচি দিয়ে সঙ্গে যোগ দেয় যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত। এছাড়া বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলও একই কর্মসূচি দেয়। সেই অবরোধ শেষে রোব ও সোমবার নতুন করে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকা হয়।
২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিন থেকে অবরোধ কর্মসূচির শুরুর পর থেকে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন সড়কে বাস, ট্রাক, অটোরিকশায় আগুন দেওয়ার এবং ভাঙচুর করার খবর এসেছে। ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের পর রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৩৬টি মামলা হয়েছে।
অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে জনগনের সাড়া দেখে সরকার ভীত হয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ক্ষমতাসীনরা নিজেরা নাশকতা করে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। সারাদেশে ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার চালাচ্ছে। বিএনপি আবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজপথে লড়াই করছে।
তিনি বলেন, ‘গণদাবীর ওপর ভিত্তি করে অবরোধ কর্মসূচি চলছে। সরকারের শত বাধা উপেক্ষা করে অবরোধ সফল করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।
রিজভী নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক-মহাসড়কে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেন।।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের হিসাব বলছে, রোব ও সোমবার সর্বাত্মক অবরোধ চলার সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ২১টি যানে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি বাস, দুইটি ট্রাক, একটি প্রাইভেটকার, একটি সিএনজি অটোরিকশা ও একটি লেগুনা পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
২৮ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১১০টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর-১টি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ছয়টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি এবং ৬ নভেম্বর ১০টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।