বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর) চৌধুরীর সব ধরনের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার স্ত্রী সুপর্ণা রায় চৌধুরী ও মেয়ে নন্দীতা সুর চৌধুরীর হিসাবের তথ্যও চাওয়া হয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতির ও রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ তদন্তের প্রয়োজনে এসব হিসাবের তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) তাদের সব ধরনের হিসাবের তথ্য চেয়ে ব্যাংকগুলোতে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। আগামী ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ধরনের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর) ও তার স্ত্রী সুপর্ণা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে, এস কে সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্ণা রায় চৌধুরী এবং মেয়ে নন্দীতা সুর চৌধুরীর নামে কোন শাখায় কোন ধরনের ব্যাংক হিসাব, ঋণ হিসাব, এফডিআর বা সঞ্চয়পত্র থাকলে তা জানাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে হিসাব খোলার ফরম, দাখিলের রেকর্ডপত্র, কেওয়াইসি, নমিনী, টিপি, সিগনেচার কার্ড এবং হিসাব বিবরণীসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পাঠাতে বলা হয়েছে।
ব্যাংকগুলোকে দেওয়া দুদকের চিঠিতে এস কে সুর চৌধুরীর পিতা হরিপদ সুর চৌধুরী ও মাতার নাম দেওয়া আছে নিরুপমা সুর চৌধুরী। বর্তমান ঠিকানা দেওয়া আছে দুটি। একটি ২/৬০২, ইস্টার্ণ উলানিয়া, ২ সেগুনবাগিচা, ঢাকা এবং অপরটি ৩০/২ পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা ১২১৯। স্থায়ী ঠিকানা- গ্রাম ও পোস্ট- দয়ারামপুর উপজেলা- লালপুর, জেলা- নাটোর। এ ছাড়া, চিঠিতে সুর চৌধুরীর জাতীয় পরিচয়পত্র ও কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) উল্লেখ করা হয়েছে। তার স্ত্রী ও মেয়েরও একই ঠিকানা দেওয়া আছে।
এস কে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি অবসরে রয়েছেন।
ডেপুটি গভর্নর থাকাকালে আলোচিত পি কে হালদারের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সুর চৌধুরী সহযোগী করে ও সুবিধা নিয়েছেন। এ ছাড়া, তিনি অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে ও সরকারের রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে আলাদা অনুসন্ধান ও তদন্ত করছেন দুদকের উপ-পরিচালক নাজমুল হুসাইনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল।
এর আগে, বিভিন্ন সময় অনিয়মের অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তলব করেছিল দুদক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কর ফাঁকির দায়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধেরও (ফ্রিজ) নির্দেশনা দেয় এনবিআর।