কলকাতায় এসেছেন বাংলাদেশ গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদ, এবং তার নেতৃত্বে রয়েছেন ডিবি ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আব্দুল আহাদ এবং অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাহেদুর রহমান। রোববার(২৬ মে) সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন তিন সদস্যের এই তদন্ত দল।
ধারণা করা হচ্ছে, এবার ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনারের হত্যাকাণ্ডের রহস্য এবার উন্মোচন হতে পারে।
ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, দুই দেশ গোয়েন্দা অতি গুরুত্বর সঙ্গে কাজ করছে, ফলে খুব শীঘ্রই রহস্যের উন্মোচন হবে। তবে আমরা আশা করছি পুরো লাশটা না পেলেও তার একটা অংশ বিশেষ উদ্ধার করতে পারব। কারণ লাশের অংশবিশেষ উদ্ধার না হলে মামলার নিষ্পত্তি করা যাবে না। এ কারণে আমাদের মূল কাজ হল দেহাংশ উদ্ধার করা। অন্যদিকে, আসামিদের জেরা করে অন্য কোন অভিযুক্তের নাম উঠে আসে কিনা- সেদিকেও আমাদের লক্ষ্য রয়েছে।
এখান থেকে বাংলাদেশ গোয়েন্দা টিম, নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন এবং মৃতদেহ ফেলা খাল পরিদর্শন করবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের ধৃত আসামিদের জেরা করে উঠে আসা তথ্য কলকাতায় এসে মিলিয়ে দেখছেন তারা। আলাপ আলোচনা চলবে দুই বাংলার গোয়েন্দাদের মধ্যে। ২৬ এবং ২৭ দুদিনের সফরে জোর অনুসন্ধান চালাচ্ছেন বাংলাদেশের টিম।
তবে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ নিশ্চিত যে, ভাঙ্গরের কৃষ্ণমাটি বাগজোলা খালের, এক থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যেই ফেলা হয়েছিল খণ্ড বিখণ্ড মৃতদেহ। অন্তত চালকের লোকেশন তাই জানান দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার বনগাঁ অঞ্চল থেকে গ্রেপ্তার হয় কসাই জিহাদকে। ওই রাতেই দেহাংশ উদ্ধারে চলে তল্লাশি। এরপর শুক্রবার আদালতের রায়ে পুলিশ জিহাদকে ১২ দিনের রিমান্ডে নিয়েই দুপুরের পর থেকে ফের তল্লাশি চালাচ্ছে। দুদিনের তল্লাশিতেও কিছু না পেয়ে গোয়েন্দারা একপ্রকার হতাশ হয়ে ওঠে।
কিন্তু, ১৪ তারিখ রাতে দুষ্কৃতরা মৃত দেহ খালে ফেলার জন্য যেই গাড়ি ব্যবহার করেছিল, সেই চালকের মোবাইল লোকেশন ওই খালের এক থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যেই ছিল বলে জানা যায়। দেহাংশ ফেলার পর গাড়ি সামনে না এগিয়ে ফের পিছন পথে ফিরে যায়।
নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন থেকে কৃষ্ণমাটি খালের দূরত্ব ৭-৮ কিলোমিটার মধ্যে। ফলে পুলিশ একপ্রকার নিশ্চিত দেহাংশ ওই খালের মধ্যেই আছে। কারণ নিউটাউনে অতটুকু দূরত্বের মধ্যে খাল ছাড়া এমন কোনো স্থান নেই যেখানে এ ধরনের কিছু ফেলা যেতে পারে। ফলে টাওয়ার লোকেশন অনুযায়ী, পুলিশ মনে করছে, দেহাংশ ওই খালের চারপাশেই আছে।
তবে প্রশ্ন থেকে যায়, সংশ্লিষ্ট গাড়িটি নির্দিষ্ট স্থানে থামিয়ে, দুষ্কৃতকারীরা যদি অন্য কোন গাড়িতে ওঠে? তাহলে কি হবে? সেক্ষেত্রে লাশের সন্ধান একপ্রকার অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছে তদন্তকারীরা।
তথ্য মতে এমপি আনারের শরীরর থেকে মাংস এবং হাড় আলাদা করা হয়েছিল। মাংসের কিমার সমান টুকরো করা হয়েছিল। ১৪মে যদি সেই দেহাংশ ফেলে, আজ অবদি ধরলে ১২ দিন হয়ে গেল। ফলে অক্ষত পাওয়া কী করে অসম্ভব? এমন প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
তবে অনুসন্ধানে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। যানা জাচ্ছে, লাশ কিমার ন্যায় টুকরো করার পর সিংহভাগ অংশ ফ্ল্যাটের দুটি টয়লেট কমোডে ফ্লাশ করে দেওয়া হয়েছে। অতি ছোট টুকরো করা হাড়। সেগুলিই প্লাস্টিকে মুড়ে ফেলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।