কিডনি পাচার চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের এক চিকিৎসকসহ তিন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছেন দিল্লি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।
এই চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করা হতো বাংলাদেশ থেকে এবং তারা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচার জাল বিস্তার করেছিল বলে ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশের ভাষ্য, চক্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন গ্রেপ্তার ডাক্তার বিজয়া কুমারী (৫০)। তিনি দিল্লির সরিতা বিহারের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক। এখন পর্যন্ত বিজয়া উত্তর প্রদেশের নয়ডার একটি হাসপাতালে প্রায় ১৬ জন রোগীর দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন।
তদন্তের শুরুতে বলা হয়, ওই নারী ডাক্তার দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্ত অ্যাপোলো হাসপাতালের বেতনভোগী ছিলেন। তবে এক বিবৃতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে, অভিযুক্ত চিকিৎসক তাদের সাথে যুক্ত ছিলেন না।
কিডনি পাচারের ঘটনা সামনে আসার পর যৌথভাবে তদন্তে দিল্লি ও রাজস্থান পুলিশ। কারণ, কিডনি পাচারকারীদের জাল রাজস্থান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল। এরপর টানা অভিযান চালিয়ে গত সপ্তাহে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ভারতের গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে যে, কিডনি পাচার চক্রটি একটি মধ্য স্বত্বভোগীদের মাধ্যমে বাংলাদেশের রোগীদের খুঁজে বের করতো। এরপর তাদেরকে নিয়ে ভারতের রাজধানীতে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য প্রলুব্ধ করতো।
এরপর কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য বিভিন্ন জাল নথিপত্র তৈরি করা হতো। দাতা ও গ্রাহকের মধ্যে ভুয়া সম্পর্ক দেখানো হতো। এইসব জাল নথিতে ব্যবহার করা হতো নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনের নামে।
কারণ, ভারতীয় আইন অনুসারে কিডনি দাতা ও গ্রাহকের মধ্যে সম্পর্ক দেখানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। অভিযানে এসব জাল নথিপত্রও জব্দ করা হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া বিজয়া কুমারী একজন সিনিয়র কনসালট্যান্ট এবং কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন। প্রায় দেড় দশক আগে অ্যাপোলো হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তার হিসেবে যোগদান করেন।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশের রাসেল এবং তার দুই সহযোগী সুমন মিয়া, ইফতি দিল্লিতে যান। সঙ্গে নেন তাদের আরেক সহযোগী ত্রিপুরার রতিশ পালকে। এরপর বাংলাদেশ থেকে কিডনি দেয়ার নাম করে রোগী নেয়া হয় দিল্লিতে।
তারা কিডনি দাতাদের দিতো চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। তবে গ্রহীতাদের কাছ থেকে আদায় করতো২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা। এই চারজনের মধ্যে ইফতি পালিয়ে গেলেও বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ বলেছে যে, কিছু রোগীকে চাকরির প্রস্তাবের অজুহাতে ভারতে আনা হয়েছিল এবং তাদের কিডনি অপসারণ করা হয়েছিল।