বাজেট নিয়ে গোলযোগের মধ্যে দায়িত্ব নেওয়ার ৪৫ দিনের মাথায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) পদত্যাগের ঘোষণা দেন লিজ ট্রাস। এখন কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী কে হচ্ছেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা।
পার্টি যাকে নেতা নির্বাচন করবে তিনিই হবেন যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। লিজ ট্রাস জানিয়েছেন, টোরি (কনজারভেটিভ) দলের নেতা নির্বাচন আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। কনজারভেটিভ পার্টি, যা পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অধিকারী এবং আরও দুই বছরের জন্য দেশব্যাপী নির্বাচন আহ্বানের প্রয়োজন নেই। এখন তারা ২৮ অক্টোবরের মধ্যে একজন নতুন নেতা নির্বাচন করবে। যিনি হবেন ছয় বছরে ব্রিটেনের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী।
খবর মিলছে যে এবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড় সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাককে পেনি মর্ডান্টের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারে, তবে বরিস জনসনের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনাও রয়েছে। তিনি গত জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারিত হন এবং তার মন্ত্রীরা তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন।
টোরি নেতা নির্বাচনে সাবেক চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক ছিলেন লিজ ট্রাসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী গতবারের নির্বাচনে। তাকে হারিয়ে ট্রাস কনজারভেটিভ নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হন। অন্যদিকে, তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী পেনি মর্ডান্ট পঞ্চম দফা ভোটেই প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়েন।
ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের বক্তৃতা দেওয়ার দৃশ্য আরও একবার দেখতে হচ্ছে ব্রিটেনের নাগরিককে। ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়ার ভোটের পর থেকে ব্রিটিশ রাজনীতি কতটা অস্থির হয়ে উঠেছে তা বোঝাই যাচ্ছে।
১০ নম্বর কার্যালয়ের বাইরে লিজ ট্রাস স্বীকার করেছেন যে, তিনি তার দলের বিশ্বাস হারিয়েছেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন লিজ ট্রাস। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে না পেরে মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে ট্রাসই সবচেয়ে কম সময় প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার রেকর্ড করলেন।
ট্যাক্স ইস্যুকে কেন্দ্র করে টানাপোড়েন তৈরি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে কোয়াসি কোয়ার্টেংকে সরিয়ে দেন গত ১৪ অক্টোবর। তার স্থলাভিষিক্ত হন জেরেমি হান্ট। নতুন অর্থমন্ত্রী এখন বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে এবং ব্রিটেনের রাজস্ব খ্যাতি পুনঃনির্মাণ করার জন্য দৌড়াচ্ছেন।
বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার দিকে যাচ্ছে এবং মুদ্রাস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় যুক্তরাজ্যে। ব্রিটিশরা জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকটের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতি কে সামাল দিতে পারবেন সেই অপেক্ষায় গোটা যুক্তরাজ্য।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি