খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষে এক পুলিশ কনস্টেবলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এসময় আরও ২০ পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।
নিহত পুলিশের নাম সুমন ঘরামী। তার বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। সুমন শোলাডাঙা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনারের দেহরক্ষী ছিলেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সুমনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আহত ২০ জনকেও পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ কিছু ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে আওয়াজ তুলে আন্দোলনকারীদের ভয় দেখাতে চেয়েছে। সরাসরি কাউকে আঘাত করা হয়নি। কিন্তু পুলিশ সদস্য ফিরে আসার সময় আন্দোলনকারীরা একজনকে পিটিয়ে নিহত ও অন্যদের আহত করলো।
মোজাম্মেল হক বলেন, পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছে। অথচ আমার এক ভাইকে পিটিয়ে মেরে ফেললো।
এদিকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে শিক্ষার্থী, পথচারীসহ ও পুলিশের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
ছাত্র-জনতার গণমিছিলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। অপরদিকে ছাত্ররাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিকেল থেকে সংঘর্ষের ঘটনার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সিরাজুল ইসলাম (৬০), শাহরিয়ার নীরব (২৪), আবির (২৪), মিজান (৪৮), ফাইয়াস (২৩), রবিনা (৩২), নাবিল (২৪), মিজান (৩২), সৌরভ (২৩), শেখ তানিক (২২), মিতু (২১), তানিয়া (১৯), রাবেয়া সুলতানা (২৩) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদের মধ্যে কয়েকজনের শরীরে রাবার বুলেট ও শটগানের ছররা গুলি লেগেছে।
শুক্রবার (০২ আগস্ট) দুপুর ২টায় খুলনা নিউমার্কেট এলাকা থেকে বৃষ্টি ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা গণমিছিল শুরু করে। মিছিলটি ৩টার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে গল্লামারী মোড়ে পৌঁছায়। সেখানে বিপরীত দিক জিরো পয়েন্টের দিক থেকে পুলিশ মিছিল লক্ষ করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
এ সময় স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে বিপুল সংখ্যক আন্দোলনকারী মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলে পুলিশ ধীরে ধীরে পিছু হটে যায়। পরে তারা জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেয়। বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ সেখান থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।