অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসরাইলকে নির্দেশ দিয়েছে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। একইসঙ্গে গাজায় আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশ এবং যারা এ গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে দায়ের করা গণহত্যার মামলার রায়ে শুক্রবার এ নির্দেশ দেয় আইসিজে। খবর পার্সটুডে ও আল জাজিরার।
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসন, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা গেলো ডিসেম্বরে এই মামলা দায়ের করে। শুক্রবার রায় শোনার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেদি প্যান্ডরের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মামলার রায়ে আদালত ইসরাইলকে অবশ্যই গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে নির্দেশ দিলেও যুদ্ধ বন্ধ করার কথা বলেনি।
তবে হামাসের অন্যতম মুখপাত্র সামি আবু জহুরি আদালতের এই রায়কে ‘গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, আদালতের এই রায়ের কারণে ইহুদিবাদী ইসরাইল আরও বেশি এক ঘরে হয়ে পড়বে এবং তারা যে অপরাধযজ্ঞ চালিয়েছে তা উন্মোচিত হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জুহরি বলেন, আদালত যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য দখলদারকে এখন বাধ্য করতে হবে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের এ রায় কার্যকর করার ক্ষমতা নেই, জানিয়ে বিশ্লেষকরা বলেছেন, তবে এর ফলে ইসরাইল এবং তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়বে। কারণ যুদ্ধবিরতির জন্য বৈশ্বিক আহবান আরও জোড়ালো হচ্ছে।
ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে কিনা শুক্রবারের এ রায় তা নির্ধারণ করে না। তবে আইজেসি’র বর্তমান সভাপতি বিচারক জোয়ান ডোনাহু অস্থায়ী রায় ঘোষণা করার সময় বলেছিলেন যে, আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে গাজার ‘বিপর্যয়কর পরিস্থিতি’ তার চূড়ান্ত রায় দেওয়ার সময় আরও খারাপ হতে পারে।
এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা এই মামলা দায়ের করলে ইসরাইল মামলা ঠেকানোর জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছে। পাশাপাশি তারা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে।
মামলার রায়ে আদালত বলেছে, তারা দক্ষিণ আফ্রিকার আর্জির সাথে একমত এবং এই মামলা করার এখতিয়ার তাদের রয়েছে।
আদালত আরও বলেছে, দক্ষিণ আফ্রিকা যে অভিযোগ করেছে, গণহত্যা কনভেনশন অনুযায়ী তার অনেক কিছুই গাজায় ঘটছে।
এর আগে গেলো অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় গাজার হামাস সরকার। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। এ আগ্রাসনে ২৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।