বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’ রূপ নিয়েছে। এর প্রভাবে দেশের চার সমুদ্র বন্দরে সতর্ক সংকেত বাড়ানো হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে জানানো হয় মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা ছয়টায় পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ৪০৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ৪০০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিলো।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৫ ফুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ৮টি বিভাগে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এর আগে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ঘূর্ণিঝড় রেমালে পরিণত হয়েছে। যা সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি-১ শক্তিমাত্রার ঝড় হিসেবে রোববার রাত থেকে সোমবার সকালের মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সভা ও মাইকিং করে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ঝড় মোকাবিলায় কাজ করছে কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা পটুয়াখালী জেলায় ৭০৩টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। যাদের ধারণ ক্ষমতা তিন লাখ ৫১ হাজার ৫০০ জন মানুষ এবং ৮৭ হাজার ৮৭৫টি গবাদি পশু রাখার সুযোগ রয়েছে।
সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় ১৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ ৮৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছেন ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক।
খুলনায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৬০৪টি সাইক্লোন শেল্টার ও ৩টি মুজিব কিল্লা।
২০০৯ সালের ২৫ মে সুন্দরবনে আছড়ে পড়েছিল ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় আইলা। ভয়ংকর সেই দুঃস্বপ্ন ফের ফিরে আসতে পারে এই শঙ্কায় মোংলার মানুষ। তবে প্রশাসন বলছে তারা যে কোন ধরনের পস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বরিশালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। জেলার ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।