সারা দেশে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের নিপীড়নের প্রতিবাদে অনশনে বসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জোহা চত্বরে তিনি অনশনে বসেন। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তিনি এখানে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন।
ফরিদ উদ্দিন খান এর আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে সরব থেকেছেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের দখলদারিত্ব, আসন-বাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ করে আসছেন। বিভিন্ন সময় মানববন্ধন, প্রতীকী অনশনেও বসেছেন তিনি। গত বছরের ২৬ জুন একই চত্বরে নির্যাতনের বিরুদ্ধে অনশন করেন তিনি।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে অনশনের ঘোষণা দিয়ে লেখেন, ‘সারা দেশে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের চরম নৈরাজ্য ও নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং দোষী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবিতে আগামীকাল ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনশনে বসছি জোহা চত্বরে। দেশজুড়ে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর একের পর এক যে নিপীড়ন আর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে, তা রীতিমতো মানবাধিকার লঙ্ঘন। এটি মেনে নেওয়া যায় না। একজন সাধারণ শিক্ষক হিসেবে আমি ব্যথিত, ক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন। এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও নির্যাতিত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানো নৈতিক দায়িত্ব মনে করছি। আপনি যদি মনে করেন এই নৈতিক দায় আপনারও। তাহলে চলে আসুন জোহা চত্বরে। ধন্যবাদ।’
আজ সকালে ফরিদ উদ্দিন একটি প্ল্যাকার্ড পাশে রেখে জোহা চত্বরে বসেছেন। সেখানে লেখা আছে, ‘শিক্ষাঙ্গনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতিবাদে অনশন।’
ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, শিক্ষার্থীদের মা–বাবারা যাঁরা তাঁদের সন্তানকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করার জন্য পাঠিয়েছেন, তাঁরা এ রকম পরিস্থিতিতে চরমভাবে হতাশা প্রকাশ করছেন। তাঁরা কোন নিরাপত্তায় তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাবেন। চরম নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন তাঁরা। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে তিনি মনে করছেন এই ঘটনাগুলোর প্রতিবাদ করা দরকার।
ফরিদ উদ্দিন বলেন, এই ধরনের ঘটনা চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। শিক্ষার্থীদের নির্যাতন চালিয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে মারধর করা হচ্ছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের মেয়াদে কোনো শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্য অনেক ক্যাম্পাসে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে প্রশাসন বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়ে থাকেন। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের নজির চোখে পড়েনি তাঁর। আর এই কারণেই নির্যাতনকারী আরও বেশি নির্যাতন করে যাচ্ছে। তাঁরা ভয় পাচ্ছে না, কারণ, ঘটনাগুলো ঘটালে শাস্তির মুখোমুখি হতে হচ্ছে না।