আবাসনসংকট নিরসনের তিন দফা দাবি নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের একদল ছাত্রী। ছাত্রীরা অবস্থান নেওয়ায় গাড়ি নিয়ে বাসভবনে প্রবেশ করতে পারেননি উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।
আজ রোববার রাত পৌনে আটটার দিকে গাড়িতে করে বাসভবনের সামনে আসেন উপাচার্য। এ সময় তাঁর গাড়ি থেকে কয়েক গজ দূরে অবস্থান নেওয়া ছাত্রীরা ‘সিট চাই সিট চাই, মৈত্রী হলে সিট চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। এর একপর্যায়ে উপাচার্য গাড়ি নিয়ে তাঁর কার্যালয়ের দিকে যান।
এক মাসের মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হল থেকে অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্য হলে স্থানান্তর করে বৈধ আসন নিশ্চিত করা, পরবর্তী সময়ে হলের আসনসংখ্যার সঙ্গে সমন্বয় রেখে নতুন শিক্ষার্থীদের আসন বরাদ্দ ও হলের মূল ভবনের প্রতিকক্ষে ছয়জনের বেশি শিক্ষার্থীকে আসন বরাদ্দ না দেওয়ার দাবিতে আজ দুপুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় হলটির একদল ছাত্রী।
বেলা একটার দিকে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ার দুই ঘণ্টা পর ছাত্রীদের একটি প্রতিনিধিদলকে হল প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ে নিয়ে যান দুজন আবাসিক শিক্ষক। সেখানে আলোচনা শেষে ফেরার পর সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা কার্যালয়ে গিয়ে উপাচার্যের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
এরপর রাত পৌনে আটটার দিকে গাড়ি নিয়ে বাসার সামনে আসেন উপাচার্য। ছাত্রীরা বাসভবনের ফটকে অবস্থান করায় বাসভবনের কয়েক গজ দূরে উপাচার্যের গাড়ি থামে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাকসুদুর রহমান, কুয়েত মৈত্রী হলের দুজন আবাসিক শিক্ষক ও প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। তাঁরা ছাত্রীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেন।
শিক্ষকেরা বলেন, ‘তোমরা তো এক মাস সময় দিয়েছ, দাবি বাস্তবায়নের তো একটা প্রক্রিয়া আছে।’ জবাবে ছাত্রীরা বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থী স্থানান্তর বিষয়ে তাঁরা কোনো আশ্বাস পাননি। প্রশাসন চাইলে এটি করা সম্ভব। এই বিষয়ে আশ্বাস না পেলে সরবেন না বলেও জানান ছাত্রীরা।
একপর্যায়ে ছাত্রীরা ‘মানি না মানব না, সিট ছাড়া যাব না’, ‘সিট চাই সিট চাই, মৈত্রী হলে সিট চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় গাড়ি নিয়ে বাসভবনের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন উপাচার্য। এভাবে মিনিট দশেক গাড়িতে অবস্থান করার পর উপাচার্য গাড়ি নিয়ে তাঁর কার্যালয়ের দিকে যান।
উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেওয়া ছাত্রীরা বলছেন, হলের পাঠকক্ষ সম্প্রসারণ, পর্যাপ্ত শৌচাগার নির্মাণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত মহাপরিকল্পনার আওতায় হলে নতুন ভবন নির্মাণ করে আবাসনসংকট নিরসনের আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য। কিন্তু তাঁদের মূল যে দাবি (এক মাসের মধ্যে অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্য হলে স্থানান্তর করে বৈধ আসন নিশ্চিত করা), সে বিষয়ে তিনি কোনো আশ্বাস দিতে পারেননি। এই বিষয়ে সুস্পষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি চলবে।
উপাচার্য গেলেও প্রক্টর মাকসুদুর রহমান উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছিলেন। রাত সাড়ে আটটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও তিনি এবং কুয়েত মৈত্রী হলের আবাসিক শিক্ষকেরা সেখানে ছিলেন।