আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ নাও করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার বিকেলে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভা শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের দপ্তর বিষয়ক উপ-কমিটির এই মতবিনিময় সভা হয়।
জাতীয় পার্টি নির্বাচন থেকে সরে যাবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আশঙ্কা আছে, আমাদের দলের অনেকেরই আশঙ্কা আছে; দেশের জনগণের মধ্যেও এটা নিয়ে একটা শঙ্কা আছে। কিন্তু এটা চূড়ান্ত কথা হিসেবে এই মুহূর্তে আমরা বিবেচনায় আনতে পারছি না।’
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় পার্টির নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়া নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। একটি জাতীয় দৈনিক দুই মন্ত্রীর বরাত দিতে এক খবরে বলেন, ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টিকে বিশ্বাস নেই।’
মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির মহামচিব মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, তারা সরে দাঁড়ানোর জন্য নির্বাচনে অংশ নেননি। তবে প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্য নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনিনি তিনি।
চুন্নুর এই বক্তব্যের আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
নির্বাচন বর্জন করা রওশন জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট না করতে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেন।
বিকেলে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দিল কাদের বলেন, ‘ডেমোক্রেসিতে অনেক কিছু সম্ভব। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বয়কট করা, ওয়াকআউট করা- এসব বিষয় গণতান্ত্রিক নির্বাচনের সব জায়গাতেই আছে। কী হবে এটা তো এই মুহূর্তে বলতে পারছি না, হলেও হতে পারে। কিন্তু এ ব্যাপারে এই মুহূর্তে আমি কী করে বলবো তারা সরে যাবে। এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।’
জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে জোট না করতে রওশন এরশাদের অনুরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বেগম রওশন এরশাদ তার ক্ষোভের কথা জানাতে পারেন এবং তার সঙ্গে যারা নেই তাদের বিরুদ্ধে তিনি বলতে পারেন। কিন্তু দল হিসেবে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের কোনো জোট থাকবে না বা আমরা ইলেকশন করবো না- এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের পার্টিতে বা আমাদের নেত্রীও আমাদের কিছু বলেননি। কাজেই এ ব্যাপারে আমরা এখন শেষ কথা বলতে পারছি না।
রওশন এরশাদের অনুরোধ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম রওশন এরশাদ এখনো বিরোধীদলের নেতা। কারণ আমাদের পার্লামেন্ট সুপ্ত আছে, ঘুমন্ত আছে এটা কিন্তু ভেঙে দেওয়া হয়নি। সে হিসাবে বিরোধীদলের নেতা সংসদীয় দলের নেতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন তিনি (রওশন) তার দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন; জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক শুধু একটা কথাতেই টানাপোড়েন আসবে এমনটি সিদ্ধান্তের এখনো সময় হয়নি।