জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের দায়িত্ব পালনে ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে জিএম কাদেরের আবেদনের শুনানির পর বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। এ আদেশের ফলে দলটির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দায়িত্ব পালনে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানান তিনি।
অ্যাড. শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘জিয়াউল হক মৃধা ভুল তথ্য দিয়ে মামলা করেছেন। আদালতে নিজেকে তিনি জাতীয় পার্টির উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু দলের গঠনতন্ত্রে উপদেষ্টা বলতে কোনো পদ নেই। তিনি ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা। চেয়ারম্যান (জি এম কাদের) তাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন, চেয়ারম্যানই তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন। আদালতে ভুল তথ্য দিয়ে তিনি আদেশ নিয়েছেন। যে মামলা তিনি করেছেন, এ মামলা করার আইনগত কোনো ভিত্তিই নেই। মিথ্যা তথ্যের মামলা দিয়ে কেউ আইনগত সুবিধা নিতে পারে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘উচ্চ আদালত আমাদের বক্তব্য শুনে গত ৩০ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের দেওয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন। সেই সঙ্গে আপিলের গ্রহণযোগ্যতার আবেদন খারিজ করে গত ১৯ জানুয়ারি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আদেশের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেছেন। জিয়াউল হক মৃধাসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
গত বছর ৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। তার ওই আবেদনে গত ৩০ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। পরে এই আদেশ প্রত্যাহার করতে জি এম কাদের ওই আদালতেই আবেদন করেন। কিন্তু গত বছর ১৬ নভেম্বর সে আবেদনটি খারিজ করা হয়।
এই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে আপিল করেন জিএম কাদের। জেলা জজ জিএম কাদেরের আবেদনটি গত ৯ জানুয়ারি শুনানির তারিখ রাখেন। এর মধ্যে দলীয় ক্ষতির কথা তুলে ধরে গত বছর ২৪ নভেম্বর আবেদনটির শুনানি করতে আরজি জানালে জেলা জজ তা খারিজ করে দেন। এই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জিএম কাদের। রিভিশন আবেদনের শুনানির পর গত বছর ২৯ নভেম্বর হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের নিষেধাজ্ঞা ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করে রুল দেন। তার পরদিনই জিয়াউল হক মৃধা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করেন। আবেদনের শুনানির পর ওই দিনই চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রাখেন। সে ধারবাহিকতায় গত বছর ১২ ডিসেম্বর শুনানি শেষে ১৪ ডিসেম্বর আদেশের জন্য রাখেন।
ওইদিন সর্বোচ্চ আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচারাধীন আপিল ৯ জানুয়ারির মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। সে ধারাবাহিকতায় গত ৯ ও ১৫জানুয়ারি জিএম কাদেরের আপিলের শুনানির পর ১৯ জানুয়ারি আদেশের জন্য রাখেন ঢাকার জেলা জজ আদালত। ওইদিন ফের শুনানির পর আদালত জিএম কাদেরের আপিলের গ্রহণযোগ্যতার আবেদন খারিজ করেন। খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে গত ২৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জিএম কাদের