জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে গেলো সংসদ নির্বাচনে জামানত হারানো ৫৩ জন প্রার্থী এবারও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়াও জাতীয় পার্টি এবার দেড় শতাধিক নতুন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে।
যাদের তেমন কোনো পরিচিতি নেই। অতীতের নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার যে ২৮টি দল অংশ নিচ্ছে এদের মধ্যে ২৬টির এক শতাংশ ভোটও নেই।
যদিও জামানত বাজেয়াপ্তের বিষয়টি টাকার অংকে বড় কোন বিষয় নয়। কিন্তু এটি জনগণের কাছে প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতার অন্যতম এক মাপকাঠি। রীতিমতো হাস্যরসে পরিণত হন জামানত হারানো প্রার্থী।
গেলো একাদশ সংসদ নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।২৯৮ আসনে বিভিন্ন দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এক হাজার ৮৫৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
এর মধ্যে এক হাজার ৪২২ জন অর্থাৎ প্রায় ৭৭ শতাংশ (৭৬.৬১) প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভোট পায় ৬ কোটি ১৫ লাখ ২১ হাজার ৬০৪টি। শতাংশের হিসেবে ৭৪.৪৪।
ভোট বর্জন করা বিএনপি পায় ৯৯ লাখ ৭৭ হাজার। শতাংশের হিসেবে ১২. ০৭। ওই নির্বাচনে বিএনপির ১৮৬ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। যদিও এনিয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা আছে দলটির।
এর মধ্যে ধানের শীষ প্রতীকে ২৫৬ আসনে বিএনপি প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জামানত হারিয়েছেন ১৫২ জন। এ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জামায়াতের ২২ প্রার্থীর মধ্যে ১১ জনই জামানত হারিয়েছেন।
এই তালিকার শীর্ষে ছিলো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ২৯৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৯৭ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। জাতীয় পার্টির ১৫৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৩৩ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।
ইসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের নির্বাচনের ইতিহাসে এটি বিরল দৃষ্টান্ত। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী-প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ না পেলে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থীই জামানত হারাননি। ২৫৯ আসন পেয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
ইসির তথ্য বলছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও আগের ভোটে জামানত হারানো ৫৩ জন এবারের নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন। এবার ২৬৫ আসনে প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি।
অতীতের নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এবারের নির্বাচনে অংশে নেয়া ২৮টি দলের মধ্যে ২৬টির এক শতাংশ ভোটও নেই। আর, জাতীয় পার্টির আছে ৫.৩৮ শতাংশ।
যাকে নির্বাচনে অংশ নেয়া দলের সংখ্যা বাড়ানো বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই দলগুলোর নির্বাচনে অংশ নেয়াকে বড় দলগুলোর কাছ থেকে সুবিধা নেয়ার উপলক্ষ্য বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুসারে, মনোনয়নপত্র কেনার সময় একজন প্রার্থীকে জামানত হিসেবে ২৫ হাজার টাকা নির্বাচন কমিশনে জমা রাখতে হয়।
প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ বা তার বেশি ভোট পেলে জামানত হিসেবে রাখা ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেয়া হয়। এর কম হলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়।