আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছে কিছু ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। তবে সেগুলো নিখোঁজ সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ টাইটানের কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। চারদিন আগে সাগরের নিচে টাইটানিক জাহাজ দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয় ডুবোজাহাজ টাইটান।
এক বিবৃতিতে মার্কিন কোস্ট গার্ড জানায়, সাগরের তলদেশে যেখানে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে তার কাছাকাছি কিছু ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে। খবর বিবিসির
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গবেষকদের পাঠানো হরাইজন আর্কটিকের একটি আরওভি আটলান্টিকের তলদেশে এ ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায়। বিশেষজ্ঞরা রোবটের পাঠানো তথ্য যাচাই-বাছাই করছেন। আরেকটি আরওভি জুলিয়েট নিউজার্সি থেকে রওনা হচ্ছে।
কোস্টগার্ড বলছে, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিখোঁজ সাবমেরিনটির উদ্ধারে কাজ করছে ফ্রান্স, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশেষায়িত সংস্থা।
আটলান্টিকের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জনস থেকে এক চালকসহ পাঁচজন ডুবোজাহাজটিতে যাত্রা করেন। সাধারণত সাগরের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে গিয়ে আবার ফিরে আসতে ডুবোজাহাজটির আট ঘণ্টার মতো সময় লাগে। রোববার সাগরে ডুব দেওয়ার এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরে ছোট আকারের ওই ডুবোজাহাজটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে ডুবোযানটিতে সংরক্ষিত অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। বৃহস্পতিবার সকালে টাইটানের খোঁজে একটি রিমোটলি অপারেটেড ভেহিক্যাল বা আরওভি আটলান্টিকের তলদেশে পৌঁছায়। পানির তলদেশে চলাচলে সক্ষম ওই রোবটযানটি কানাডার জাহাজ হরিজন আর্কটিক থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে।
নিখোঁজ ডুবোজাহাজ টাইটানে পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন- স্টকশন রাশ, হ্যামিশ হার্ডিং (৫৮), শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯) ও পল-হেনরি নারজিওলেট (৭৭)।
নিখোঁজ ডুবোজাহাজ টাইটানের মালিকানা প্রতিষ্ঠান ওশানগেট এক্সপেডিশন্সের সিইও স্টকশন রাশ চালক হিসেবে পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন। শাহজাদা দাউদ ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। তার ছেলে শিক্ষার্থী। হ্যামিশ হার্ডিং ব্রিটিশ উড়োজাহাজ ব্যবসায়ী ও পল-হেনরি নারজিওলেট ফ্রান্সের নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি।
উল্লেখ্য, ১৯১২ সালে ইংল্যান্ডের নিউ সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে প্রথম যাত্রায় বিশাল আইসবার্গের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল তখনকার সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী জাহাজ টাইটানিক, প্রাণ গিয়েছিল দেড় হাজার মানুষের।
দুটুকরো হয়ে যাওয়া টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষটি রয়েছে আটলান্টিকের ৩ হাজার ৮০০ মিটার নিচে। ১৯৮৫ সালে ওই ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। আটলান্টিক মহাসাগরের এ এলাকাটি কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেইন্ট জোন্স থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণে।