হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে গেছেন।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে তিনি মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে যান এবং রাত পৌনে আটটার দিকে বের হয়ে আসেন।
ডিবির সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে মামুনুল হক ডিবিতে এসেছিলেন, আবার চলেও গেছেন।
ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নিতে ডিবি কার্যালয়ে এসেছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় ফোনটি আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছিল।
তবে মোবাইল ফোনটি ফিরে পেয়েছেন কি-না এই সংক্রান্ত প্রশ্ন করলে হেফাজতের এই নেতা উত্তর না দিয়ে প্রাইভেটকারে ডিবি কার্যালয় ত্যাগ করেন।
চলতি বছরের তিন মে সকাল ১০টার দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান মামুনুল হক।
২০২১ সালের তিন এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। খবর পেয়ে হেফাজতের স্থানীয় নেতাকর্মীরা ওই রিসোর্টে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করেন মামুনুল।
১৮ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় তার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন তার সঙ্গে রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়া নারী।
এক বন্ধুর স্ত্রী ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেন মামুনুল হক। তবে গ্রেপ্তারের পর ওই নারী স্ত্রী নয় বলে বলে জানিয়েছিলেন মামুনুল। ওই মুহূর্তে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি আবার মাঝখান দিয়া অন্য কিছু মনে কইরো না’।
তবে রিসোর্টকাণ্ডে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দিতে ওই নারী বলেন, বিয়ের প্রলোভেন রয়েল রিসোর্ট ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে তাকে বহুবার ধর্ষণ করেন সাবেক এই হেফাজত নেতা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবুদ্দিন জানিয়েছিলেন, ওই নারীর স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন মামুনুল। সেই সুবাদে মামুনুলের সঙ্গে তার পরিচয়। পরে স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ হলে মামুনুল তাকে ঢাকায় বাসা রেখে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতেন।
গত বছরের ছয় জুন ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে সাক্ষ্য দেন তার ছেলেসহ এক সাংবাদিক। এ নিয়ে ওই মামলায় মোট ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল গ্রেপ্তার হওয়ার পর ওই মাসেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ অর্ধশতাধিক মামলা হয়। পরে সেসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর থেকে এসব মামলায় কারাগারেই ছিলেন মামুনুল হক।