দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তিন ব্যাংক কর্মকর্তা।
সোমবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন।
সাক্ষ্য দিয়েছেন— আরব বাংলাদেশ ব্যাংক লিমিটেডের কারওয়ানবাজার শাখার তৎকালীন অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রধান কার্যালয়) এসএম মুসা করিম, কারওয়ানবাজার শাখার তৎকালীন সিনিয়র অফিসার (বর্তমানে অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রধান কার্যালয়) ওবাইদুর রশিদ খান ও কারওয়ানবাজার শাখার তৎকালীনা অফিসার (বর্তমানে এলিফ্যান্ট রোড শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার) এমরান আহাম্মেদ।
সাক্ষীদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেছেন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। দুর্নীতি দমন কমিশনের পিপি সাক্ষীদের জবানবন্দি দিতে সহযোগিতা করেন।
পরে তিনি জানান, তিন ব্যাংক কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামীকাল মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবারও এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
এদিকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিদিন মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য থাকায় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালত কক্ষেই প্রতিবাদ জানান। বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ওমর ফারুক ফারুকীর নেতৃত্বে তারা প্রতিবাদ করেন।
মাসুদ তালুকদার বলেন, সাধারণ মামলার মতো নয় এটা। প্রতিদিন তারিখ ধার্য করা হচ্ছে যেটা ঠিক নয়। আদালত এ সময় বলেন, প্রতিদিন সাক্ষ্যগ্রহণে আইনি কোনো বাধা নেই। পরে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালত থেকে বের হয়ে মিছিল–সমাবেশ করেন।
তারেক ও জোবাইদা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী মামলার শুনানিতে অংশ নিতে পারছেন না। গত বৃহস্পতিবার দৈনিক দিনকালের হিসাবরক্ষক সৈয়দ আজাদ ইকবাল ও ইমরাজ আলী শিকদার সাক্ষ্য দেন। ২১ মে মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা সাক্ষ্য দেন।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন আদালত। এই দুজনই পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে ব্যক্তিগত আইনজীবী নিয়োগের আবেদন ওই দিন নামঞ্জুর করা হয়।
এ মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানকে আদালতে হাজির হতে বিজ্ঞপ্তি (গেজেট) প্রকাশ করা হয়। সরকারি মুদ্রণালয় থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এই মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তার মা অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। তারেক রহমানের শাশুড়িকে মামলা থেকে হাইকোর্ট অব্যাহতি দেন।
কয়েকটি মামলায় সাজা নিয়ে লন্ডনে বসবাস করছেন তারেক রহমান। তার সঙ্গে থাকা জোবাইদা রহমান এই একটি মামলায়ই আসামি।