তিস্তার গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ পানি ছেড়েছে ভারত। শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে বিকেল চারটার মধ্যে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ দুই লাখ এক হাজার ৬৪৭ কিউসেক পানি বাংলাদেশের দিকে ছাড়া হয়েছে। এতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তিস্তা সংলগ্ন এলাকায়।
পশ্চিমবঙ্গ সেচ দপ্তরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সেচ অধিদপ্তর তিস্তা সংলগ্ন ভারতের সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। আর দোমহনী থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত সংরক্ষিত এলাকায় জারি করেছে লাল সতর্কতা।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সিকিম, দার্জিলিং ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলাগুলোতে চলছে ভারী বৃষ্টি। তিস্তা সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের উত্তর জেলা জলপাইগুড়িতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১৪৩ মিলিমিটার এবং শিলিগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ২২৩ মিলিলিটার।
ভারতের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সমতলের তুলনায় পাহাড়ে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেশি। ফলে উত্তরের নদনদী ও পাহাড়ি ঝিরিগুলোতে দেখা দিয়েছে অপ্রত্যাশিত হড়কা বান, যা ব্যারেজ দিয়ে আটকে রাখা বা সাময়িক সময়ের জন্য ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
নীলফামারীর ডিমলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি আবারও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট (স্লুইসগেট) খুলে রাখা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৯টায় ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমা বরাবর প্রবাহিত হচ্ছিল। দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিকেল তিনটায় পানি বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ডালিয়া পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, আগামী কয়েক ঘণ্টায় এ পানির প্রবাহ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলা উপজেলা ঝাড়সিংহেস্বর, কালীগঞ্জ, ছোটখাতা, কিছামত ছাতনাই, খোগার চর, জুয়ার চর, ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়ী, পূর্ব বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার শৌলমারী, গোলমুন্ডাসহ প্রায় ১৫টি চর এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পাউবোর ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে তিস্তা অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।