অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদের অভিযোগে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নারী ফুটবল লীগের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ (বুধবার) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুপুর সোয়া ১২টায় সংস্থাটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. ইয়াছির আরাফাত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।
ক্লাবসহ বিভিন্ন খাত থেকে অর্থ আত্মসাৎ ও ঢাকায় ফ্ল্যাটসহ অবৈধ সম্পদের অভিযোগ রয়েছে মাহফুজা আক্তার কিরণের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
একই ধরনের অভিযোগে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে গতকাল। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কেনাকাটায় কোনো দুর্নীতি হয়নি, ফিফা বা বাফুফে কেউই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, মিডিয়ায় লেখা হচ্ছে আর্থিক দুর্নীতি, কিন্তু বিষয়টি আর্থিক দুর্নীতি না। প্রথমত বাফুফে থেকে যে কেনাকাটা হয়েছে, সেটা বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে হয়নি, দ্বিতীয়ত বাফুফে পণ্য বা সেবাগুলো বুঝে পেয়েছে এবং তৃতীয়ত ফিফার নিয়মকানুন মেনে ক্রয় করা হয়েছে। অর্থাৎ ফিফা বা বাফুফে কেউই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। কিন্তু নৈতিকতার দিক থেকে ফিফা বেশকিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। যে বিষয়গুলো নিয়ে এরইমধ্যে স্পোর্টসের সর্বোচ্চ আদালত দ্যা কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্ট-এ আপিলও করেছি। আমার আইনজীবীরা সেটা নিয়ে কাজ করছেন। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আজকে দুদককে সহযোগিতার জন্য এসেছি। আমি তাদের বেশ কিছু বিষয়ে অবহিত করেছি।
দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পর চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছরের জন্য সব ধরনের ফুটবল কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ ও প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা করে ফিফা। তখনই বাফুফের কর্তা-ব্যক্তিদের দুর্নীতির বিষয়টি আবারও সামনে চলে আসে। বিভিন্ন মহল থেকে আবারও দাবি ওঠে বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ ফুটবল ফেডারেশনের সব বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের।
এরপর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সুমনের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধানের জন্য নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গত ১৫ মে হাইকোর্টের আদেশে আগামী চার মাসের মধ্যে দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের ফুটবল ফেডারেশনের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতিসহ সব বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।