নতুন নির্বাচন কমিশন তার সক্ষমতা না দেখিয়ে আগের কমিশনের মতো কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আত্মসমর্পণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন বিশ্লেষক ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশেন নির্বাচন পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনের ফলাফল এমন হবে তা আগে থেকেই ধারণা করা হয়েছিল। অন্তত একজন সংসদ সদস্য যখন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণায় অংশ নেন এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে কমিশন যখন অসহায়ত্ব প্রকাশ করে, তখন ফলাফল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার যথেষ্ট কারণ থাকে। একজন সংসদ সদস্যকেই যখন নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়, তখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আরও অক্ষমতা প্রকাশ পাবে।
‘দায়িত্ব পালন করার প্রতিজ্ঞা করেই দায়িত্ব নিয়েছে কমিশন। পালন করতে না পারলে পদত্যাগ করে সরে যাবে। সাংবিধানিক পদে থেকে তো জনগণকে দেওয়া প্রতিজ্ঞা ভাঙতে পারেন না। আইন প্রয়োগের প্রচুর ক্ষমতা দেওয়া আছে কমিশনের। তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকে। ভোটারের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, প্রার্থীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। আগের নির্বাচন কমিশনগুলোও এজন্য দায়ী।’
তিনি বলেন, ক্ষমতার পালাবদলে রাজনৈতিক দলগুলো সর্বশক্তি প্রয়োগের চেষ্টা করে। কিন্তু মনে রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা সেই শক্তির চেয়েও বেশি। এটি ধারণ করতে না পারলে তো আত্মসমর্পণ করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।
ইভিএম ব্যবস্থা সম্পর্কে এই বিশ্লেষক বলেন, এটি একটি বাতিল ব্যবস্থা। এই ইভিএম মেশিন নিয়ে নির্বাচন কমিশনেরই নিয়োগ করা প্রযুক্তিবিদ প্রয়াত অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেছিলেন, ‘এই মেশিন দুর্বল মানের’। সেই মেশিন দিয়ে কমিশন নির্বাচনের আয়োজন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
‘গত জাতীয় নির্বাচনে যে ছয়টি আসনে ভোট গ্রহণ করা হয়, সেখানে গড়ে ৫১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। অথচ অন্য আসনগুলোতে ভোট পড়েছিল ৮১ শতাংশ। কমিশনের দেওয়া তথ্য থেকেই প্রমাণিত ইভিএম প্রযুক্তি মানুষকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত রাখছে। কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে ১০১টি কেন্দ্রের ফলাফলেও পরাজিত প্রার্থী এগিয়ে ছিলেন। পরের চারটি কেন্দ্রের ফলাফল সব পাল্টে দিলো। চারটি কেন্দ্রের ফল দেরিতে এলো। অথচ ইভিএমের ফলাফল ভোট শেষেই পাওয়ার কথা। পরাজিত প্রার্থী এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে ফের ভোট গণনা করতে হবে। কিন্তু ইভিএম পদ্ধতিতে পুনরায় ভোট গণনা সম্ভব নয়। আর এটিই হচ্ছে ইভিএমের বড় দুর্বলতা।’