শিক্ষকদের কর্মবিরতির আজ ৯ম দিন। সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ বাতিল করে সুপার গ্রেডে অন্তর্ভূক্তির দাবিতে, সোমবারও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন হয়েছে দেশের ৪০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।
প্রত্যয় স্কিম বাতিল, শিক্ষকদের সুপারগ্রেড দেওয়া ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রণয়নের দাবিতে প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, সর্বাত্মক কর্মবিরতিসহ নানা পদ্ধতিতে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন শিক্ষকরা। দাবি নিয়ে কঠোর অবস্থানে থাকলেও শিক্ষকদের এ আন্দোলনে এখনও কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি। আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকও হয়নি তাদের।
একাধিক শিক্ষক নেতা জানিয়েছেন, তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছেন। তবে দীর্ঘ আন্দোলনের পরও সরকারের কোনো মহল তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, আমরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছি, তবু রাষ্ট্র থেকে একটি ফোন কল পর্যন্ত করা হয়নি। এটি শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা।
এর আগে গত ৩ জুলাই ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতার মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন শিক্ষক সমিতির নেতারা।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানান তিনি। ৪ জুলাই এ সভাটি হওয়ার কথা থাকলেও পরে স্থগিত হয়ে যায়।
তবে খুব শিগগিরই বৈঠক হবে বলে প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বৈঠকটি স্থগিত হয়েছে। এখনও কারও সঙ্গে আলোচনা হয়নি। তবে আমার সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীসহ অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। অচিরেই আমরা আলোচনা আশা করছি এবং তা হতে হবে।
শিক্ষকদের আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে দেশের উচ্চশিক্ষাঙ্গন। ক্যাস্পাসে শিক্ষার্থীদের আনাগোনাও কম। এতে করে হাজার হাজার শিক্ষার্থী সেশনজটের ঝুঁকিতে পড়েছেন।
গতকাল সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কলা ভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষকরা। ‘প্রত্যয়’ স্কিম থেকে মুক্তি চেয়ে শিক্ষকরা বলেন, সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও একইদিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
এদিকে, কোটা বাতিলের দাবিতেও আন্দোলনে নেমেছে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ফলে ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলনে কার্যত অচল দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই।