বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরুর খবর পেয়ে একপর্যায়ে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সেখানে পৌঁছান। সরাসরি তিনি কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে ডিবির সদস্যরা তাকে বাধা দেন। বারবার চেষ্টা করেও প্রবেশে ব্যর্থ হলে মির্জা ফখরুল কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে বসে পড়েন। এরপর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ওই স্থানে তিনি একাই রয়েছেন। তাকে ঘিরে আছেন সাধারণ কর্মী ও সাংবাদিকরা। আশেপাশের এলাকায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের অবস্থান সম্পর্কে জানা গেলেও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দিকে আসেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ কেন্দ্র করে বুধবার দুপুরের আগে থেকেই সাঁজোয়া যানসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন হয় নয়া পল্টনে। এদিন দুপুরে মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন তাদের অনুসারীরা কার্যালয়ের নিচে অবস্থান করছিলেন। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলে ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। এসময় পুলিশের গুলিতে একজন নিহত ও শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাড়ে ৪টা থেকেই ফুটপাতে বসে আছেন। তাকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিএনপির মহাসচিব যখন ফুটপাতে প্রতিবাদমুখর, ভেতরে তখন পুলিশের অভিযান চলছে। এরইমধ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, ঢাকা মহানগর (উত্তর) কমিটির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে পুলিশ ভ্যানে তুলে ডিবি অফিসে নেওয়া হয়।
কার্যালয়ের সামনে বসে সাংবাদিকদের সামনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘পুলিশ প্রধান কার্যালয়ের ভেতরে ব্যাগ নিয়ে ঢুকেছে। এগুলোতে বিস্ফোরক আছে দেখিয়ে পরে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করবে। এর থেকে খারাপ কাজ আর কিছু হতে পারে না। ডিএমপি কমিশনার আমাদের বারবার কথা দিয়েছিলেন, আমরাও বলেছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চাই।’
প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে একা থাকলেও বিএনপির মহাসচিবের পাশে কাউকে দেখা যায়নি। আশেপাশে দলের সিনিয়র নেতাদের অফিস, বাসা থাকলেও তারা কেউ আসেননি, তারা নিরাপদে আছেন বলে জানা গেছে। এরমধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান অসুস্থবোধ করলে তিনি বাসার দিকে ফিরে যান।