নাঈমুল ইসলাম অসুস্থ, ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা দর্শনার্থী নিষেধ করেছেন। সকলের দোয়া চেয়েছেন। আজ শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায়টির শিরোনাম নাঈমুল ইসলাম খান। নব্বইয়ে স্বৈরাচারের পতনের পর সবকিছুতে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। সংবাদপত্রের পরিবর্তনটা এসেছিল নাঈমুল ইসলাম খানের হাত ধরে, আজকের কাগজ নামে। এর আগে ‘খবরের কাগজ’এর মাধ্যমে বদলে দিয়েছিলেন সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের প্রচলিত ধারণা। বিশিষ্টজনদের ক্ষুরধার লেখনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যোগ করে নতুন মাত্রা।
সেই ‘খবরের কাগজ’এর ধারণাটাই বিস্তৃত হলো দৈনিক আজকের কাগজে। কলামের ঠাই হলো দৈনিকেই। আজকের কাগজ স্মার্ট, আধুনিক, গদ্য ঝরঝরে, ভাষায় বাহুল্য নেই, বিবরণে আধিক্য নেই। জনাব, সর্বজনাব, মাননীয়, মহামান্যের অত্যাচার থেকে মুক্তি মেলে পাঠকের। আজকের কাগজ পড়তে পাশে অভিধান লাগে না। মানুষ বিস্মিত- আরে এতো আমাদের মত করে লিখছে! প্রথম পাতায় তিন লাইন নিউজ পড়ে বাকিটার জন্য অত বড় পত্রিকা হাতড়াতে হয় না। আজকের কাগজ দারুণ চমক, দারুণ রিলিফ।
সেই আজকের কাগজের হাত ধরে, ভোরের কাগজ হয়ে আজকের প্রথম আলোর বিকাশ। যুগান্তর, সমকাল, কালের কণ্ঠও এই ধারারই অনুসারী। এরপর নাঈমুল ইসলাম খান এলেন ‘আমাদের সময়’ নিয়ে। আবার চমক, আবার আলোড়ন। মাত্র দুই টাকায় পূর্ণাঙ্গ দৈনিক! ধারণাটাই অভিনব। বাহুল্য-মেদ যা ছিল, এবার তাও ঝরে গেল। আজকের কাগজ ধরনের দৈনিকগুলো পাঠককে সারাদিন ব্যস্ত রাখে। আর ‘আমাদের সময়’ ধর তক্তা, মার প্যারেক স্টাইল। ঠিক যতটুকু দরকার, ততটুকুই। ব্যস্ত মানুষ একপলক চোখ বুলিয়েই জেনে নেবে প্রয়োজনীয় খবর। বাংলাদেশের সংবাদপত্রে দুটি জনপ্রিয় ধারার শুরুটা নাঈমুল ইসলাম খানের হাত ধরে। নাঈমুল ইসলাম খানের আজকের কাগজকে অনুসরণ করে আজ বাংলাদেশে অনেক দৈনিক। আমাদের সময়ের ঘরানারও একাধিক দৈনিক আছে বাজারে। তিনি এখন আমাদের নতুন সময় গড়ছেন। আমি জানি এটি শুধু নামে নয়, কার্যত ‘নতুন’ই হবে। মজাটা হলো নাঈমুল ইসলাম খান কখনোই কাউকে অনুসরণ করেন না, এমনকি নিজেকেও না।