আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মার্কিন ‘সম্পৃক্ততা’ থাকবে। বাংলাদেশও এটাকে স্বাগত জানায় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
বুধবার (৩১ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফরের অভিজ্ঞতা বিনিময়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
গত ১০ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা। ৩০ আগস্ট সফর শেষে দেশে ফেরেন তিনি। এরপর বুধবার সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
আসন্ন নির্বাচন, বাংলাদেশের মানবাধিকার, জ্বালানি ও খাদ্যসহ নানা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্ডার সেক্রেটারি জে ডব্লিউ ফারনান্দেজের সঙ্গে কথা হয় তার।
সেগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘ওই বৈঠকের আলোচনায় নির্বাচনের বিষয়টি আসলে আমি বলেছি, আমরা সবাই চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। তবে এটি সরকারের দায়িত্বে নয়। এটি আমাদের নির্বাচন কমিশন দেখে। তারা এরই মধ্যে স্থানীয় সরকারের বেশ কিছু নির্বাচন করেছে, যেগুলো অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে এবং সবার অংশগ্রহণ ছিল। জাতীয় নির্বাচনও তাই হবে।’
তিনি বলেন, ‘জবাবে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি জে ডব্লিউ ফারনান্দেজ বলেছেন, তারাও নির্বাচনে সম্পৃক্ত থাকবেন। আমিও বলেছি, আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে আমরাও তোমাদের সুযোগ দিতে রাজি আছি। এটা আমাদের নির্বাচনী নিয়মের মধ্যেই আছে।’
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরানোর জবাবে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমরা তাদের মানবাধিকারের বিষয়টি নিয়ে বলেছি। বলেছি, তোমরা মানবাধিকারের কথা বলো। অথচ তোমরা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিকে তোমাদের দেশে থাকতে দিয়েছো। বিষয়টি তারাও স্বীকার করেছে এবং বলেছে, ‘এটি আমাদের আইন ও বিচার বিভাগ দেখছে।’ আমি বললাম, আইনে তো অনেক কিছু থাকে। তার অর্থ তো এই না যে, তোমরা একটা ক্রাইমকে সাপোর্ট করবে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী
প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, কথায় কথায় আসলো বিনিয়োগের বিষয়টি। তারা আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ক্লিন এনার্জিতে সাহায্য করতে চায়। ঋণ দেবে তারা। শিক্ষা ও প্রযুক্তিতেও সহযোগিতা করতে চায়। আমরাও এতে আগ্রহী। আমি আশা করছি, শিগগির ডেলিগেশন আসবে।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমি তাদের বলেছি- জ্বালানির দাম বেড়েছে। এটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা। এটা আামাদের দেশের কিছু লোক ও মিডিয়া বাংলাদেশের সমস্যা বলেই উপস্থাপন করছে। এটা তো আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য হুমকি। জবাবে তাদের আন্ডার সেক্রেটারি আমাদের উন্নয়ন অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
ভিন্ন দেশ থেকে জ্বালানি-খাদ্য আমদানিতে বাধা নেই
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক এ উপদেষ্টা বলেন, ‘সার, খাদ্য ও তেল আমদানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। সে কারণে ভিন্ন কোনো দেশ থেকেও বাংলাদেশ এসব আমদানি করতে পারবে।’
তিনি বলেন, মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি জে ডব্লিউ ফারনান্দেজ ও সহকারী আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে বৈঠক করেছি। তখন আলোচনায় ফারনান্দেজ বলেন, ‘সার, খাদ্য ও তেলের মতো কিছুতে স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) নেই।’ আমি জানতে চেয়েছিলাম, আমরা কি ভিন্ন সোর্স থেকে তেল আনতে পারবো? ওনি চুপ ছিলেন। তাতে আমার মনে হয়েছে, তিনি ইতিবাচক।