বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আদালতে শুনানিকালে এ্যানি বিচারকের সামনে কাঁদতে কাঁদতে থানায় তাকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে তার ধানমন্ডির বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে বুধবার তাকে নাশকতার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলমের আদালতে হাজির করা হয়।
ধানমন্ডি মডেল থানায় করা মামলায় তদন্তের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক শাহিদী হাসান। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
আদালতে শুনানিতে এ্যানি কিছু বলবেন কিনা- জানতে চান বিচারক। তখন বিচারকের সামনে কাঁদতে কাঁদতে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি রাজনীতি করি। কোনো অপরাধ করলে গ্রেফতার করবে। কিন্তু আমাকে থানায় নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা কোন যুগে বসবাস করছি। আমি কি চোর, না ডাকাত? আমি এর বিচার চাই।
এরপর শুনানি শেষে বিচারক এ্যানির জামিন নামঞ্জুর করে তাকে ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৩ মে ধানমন্ডি সিটি কলেজের সামনে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের প্রায় ১০-১৫ হাজার নেতাকর্মী পদযাত্রা শেষে চলে যাচ্ছিলেন। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুলিশের কাজে বাধা দেন। এছাড়া পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারকে উৎখাত ও জনসাধারণের জানমালের ক্ষতিসাধন, গণপরিবহন ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড শুরু করেন।
এসময় পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর হামলা করেন এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। যাতে পুলিশ কর্মকর্তা ও ফোর্স গুরুতর আহত হন। পরে সরকারি সম্পত্তি, জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য আসামিদের ধাওয়া করলে তারা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্নভাবে ছত্রভঙ্গ হয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি করে।
এ মামলায় এ্যানি এজহারনামীয় ২৯ নম্বর আসামি বলে জানান থানার ওসি পারভেজ ইসলাম। তিনি জানান, এ্যানির বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুরে আরও দুটি মামলায় ওয়ারেন্ট ইস্যু করা আছে।
এদিকে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে গ্রেফতারের বিষয়ে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, তার বিরুদ্ধে মোট দুটি ওয়ারেন্ট আছে লক্ষ্মীপুর থানায়। জেলা পুলিশের রিকোয়েস্টের ভিত্তিতে ধানমন্ডি মডেল থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পাশাপাশি রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় পুলিশকে আঘাতের মামলায়ও তিনি এফআরআইভুক্ত আসামি। দুটি ঘটনায় ধানমন্ডি থানা পুলিশ তাকে ধরে আনে।
ডিবিপ্রধান বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজই অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা। তিনি যে পর্যায়ের নেতাই হোক, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না, হবেও না।