একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীকে এবং এর অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় জামায়াত ও শিবিরকে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে দায়ী করা এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন বাতিলে আপিল বিভাগের রায়ের কথা উল্লেখ করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ আছে যে, সাম্প্রতিক সংগঠিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জামায়াত ও শিবির সরাসরি এবং ইসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিলো।
প্রজ্ঞাপনে জামায়াত, শিবির এবং তাদের সমস্ত অঙ্গসংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গত সোমবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের বিষয়ে ‘সর্বসম্মত’ সিদ্ধান্ত হয়। এরপরের দিন আইনমন্ত্রী আনিসুল বলেন, বুধবারের মধ্যেই জামায়াত নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
স্বাধীনতার পর জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকার। কিন্তু পরে সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের সময় আবার রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পায় জামায়াত।
এরপর প্রায় সাড়ে চার দশক ধরে একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী ও ধর্মভিত্তিক দল জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি উঠছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার পর সে দাবি আরো জোরালো হয়।
যুদ্ধাপরাধীরে বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যায় জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা উঠে আসে। সেখানে একটি রায়ে জামায়াতকে ‘ক্রিমিনাল দল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া আরেকটি মামলায় রায়ের ফলে গণ প্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারায় জামায়াতে ইসলামী। এরপর গত তিনটি নির্বাচনে ভোটে অংশ নিতে পারেনি জামায়াত।
এদিকে নিষিদ্ধের পর জঙ্গি সংগঠন হিসেবেই জামায়াত-শিবিরকে মোকাবিলা করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কোটা আন্দোলনের নামে জঙ্গিরা নাশকতা চালিয়েছে।