রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত প্রিতম-জামান টাওয়ারে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কলাপসিবল গেট ও তালা ভেঙে প্রবেশের চেষ্টা করেন নূরসহ দলীয় নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ধ্যার দিকে আবারও গেটে ঝুলিয়ে দিয়েছে মালিকপক্ষ।
পল্টন থানা পুলিশের অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ধাক্কাধাক্কি করে কলাপসিবল গেট ভেঙেই কার্যালয়ে প্রবেশ করেন নূর। পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে নূরসহ দলীয় নেতাকর্মীদের বের করে দেওয়া হয়েছে।
তবে গণঅধিকার পরিষদের নেতা শাকিলুজ্জামানের দাবি, এ ঘটনায় নুর আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিকেলে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা করে। এতে সভাপতি নুরুল হক নুরসহ অন্তত ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। নুরকে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছিলেন, রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ের তালা ভেঙে নতুন কেচিগেট লাগানো হয়েছে। এছাড়া দলটির নিবন্ধন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়সহ জরুরি কাগজপত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পল্টন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হবে।
তিনি বলেছিলেন, কর্নেল মিয়া মশিউজ্জামান (অব.) আমাদের কার্যালয়ে গেটের সামনে নতুন আরেকটি কেচিগেট লাগিয়েছেন। সেখানে গুণ্ডাদের পাহারাদার হিসেবে বসিয়েছেন। তাদের হাতে অস্ত্র রয়েছে, আমরা সেখানে গেলেই আমাদের ওপর হামলা করবে। নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমরা এখনো কার্যালয়ে যাইনি। যারা কার্যালয়ে গিয়েছে তাদের মারধর করা হয়েছে। এছাড়া মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে। মিয়া মশিউজ্জামান আমাদের অফিস দিয়েছিল। তিনি এখন দল করেন না, তাই চুক্তি অনুনয়ী অফিস ভাড়া দেব। প্রথম দিকে তিনি নমনীয় ছিলেন, কিন্তু সরকারের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে আমাদের নানাভাবে হয়রানি শুরু করেছেন।
নুর বলেন, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা না করায় আমাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চলছে। আমরা মাথানত করব না।
তবে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কার্যালয়ের সামনে ফেসবুক লাইভে নুরুল হক নুর বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ছয় মাসের সময় যেন আমাদের দেওয়া হয়। আপনারা পুলিশ-প্রশাসন এ দখলদারের পক্ষে না থেকে চুক্তি অনুযায়ী আমাদের কার্যালয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দিন।
এখানে বাধা দিলে রক্ত ঝরবে, লাশ পড়বে উল্লেখ করে নুর বলেন, আপনারা এখান থেকে চলে যান আমাদের কার্যালয়ে আমাদের ঢুকতে দিন।
এ ব্যাপারে পল্টন থানার ওসি সালাহ উদ্দিন মিয়া বলেন, মালিকপক্ষ ভাড়া আর দেবে না, সেজন্য তারা অফিস তালা দিয়েছেন। নতুন কলাপসিবল গেট লাগানো হয়েছে। কিন্তু সেটি জোর করে, ভেঙে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন নুর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ধাক্কাধাক্কি করেই নূরসহ লোকজন গেট ভেঙে কার্যালয় প্রবেশ করে।
ওসি সালাহউদ্দিন বলেন, পুলিশ এতকিছুর পরও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে, উভয়পক্ষকে নিবৃত করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নূরসহ দলীয় নেতাকর্মীদের বের করা হয়। নতুন তালা আবার ঝুলিয়েছে মালিকপক্ষ। আমরা বলেছি, এখান আর কোনো ঝামেলা নয়। যা করার আদালতে গিয়ে করেন।