জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত, মহামারি এবং যুদ্ধের মধ্যে পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এই পৃথিবীতে মানুষ কেবল পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমেই টিকে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি-২০-এর ১৮তম শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
জি-২০ গোষ্ঠীর সদস্য না হলেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু বাংলাদেশকেই ওই সম্মেলনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে আয়োজক ভারত।
প্রধানমন্ত্রী শে হাসিনা বলেন, এই শীর্ষ সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন আমাদের এই ধরিত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের একাধিক সংকট, কোভিড-১৯ মহামারি এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চ্যালেঞ্জ দ্বারা প্রভাবিত।
‘এই চ্যালেঞ্জগুলি মানবজাতির অংশীদারিত্বমূলক ভবিষ্যৎ, শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে এক সম্প্রদায়ের রূপকল্পকে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সকলের জন্য অপরিহার্য করে তোলে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাস্তবতা হলো মানুষ এবং আমাদের এই ধরিত্রী কেবল পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমেই টিকে থাকতে পারে।’
‘অতএব, আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টা সবুজ ও টেকসই উন্নয়নের উপর জোর দিচ্ছে। এখন, আমরা চক্রাকার অর্থনীতি পন্থাও বেছে নিচ্ছি।’
জি-২০ গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশ কাজ করতে প্রস্তুত বলেও ভাষণে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের এই ধরিত্রীকে শক্তিশালী করতে ও বাঁচাতে জি-২০ অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। একে অপরের এবং এই ধরিত্রীর যত্ন নেওয়ার জন্য আমাদের নিজেদের পুনরায় অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।’
ভাষণে ঐতিহাসিক শহর নয়াদিল্লিতে জি-২০ লিডার্স সামিটে উপস্থিত হতে পেরে নিজের আনন্দের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ভারত সরকারকে ধন্যবাদও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এই আমন্ত্রণ আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের সম্পর্কের গভীরতা ও উষ্ণতাকে প্রতিফলিত করে।’
এবারে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘এক বিশ, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ নেয়া হয়ে উপনিষদ থেকে।
এই প্রতিপাদ্য গ্রহণ করায় নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি আমাদের এই গ্রহের সকল প্রাণীর মূল্যবোধ এবং উন্নত ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করার অনিবার্যটাকে সমুন্নত করে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে বাংলাদেশ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং মোকাবিলায় উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা না থাকলেও এর পরিণতির শিকার হিসেবে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ।