বৃহস্পতিবার , ২৩ মে ২০২৪ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. London Mirror Specials
  2. অন্যান্য
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খুলনা
  6. খেলা
  7. চট্রগ্রাম
  8. জেলার খবর
  9. ঢাকা
  10. তথ্য-প্রযুক্তি
  11. প্রবাসের কথা
  12. বরিশাল
  13. বাংলাদেশ
  14. বিনোদন
  15. ব্যাবসা-বাণিজ্য

পার্বত্য চট্টগ্রাম-মিয়ানমার নিয়ে খ্রিস্টান রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র চলছে: শেখ হাসিনা

প্রতিবেদক
Newsdesk
মে ২৩, ২০২৪ ১০:২৬ অপরাহ্ণ

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং মিয়ানমারকে নিয়ে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা কলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চক্রান্ত এখনো আছে। পূর্ব তিমুরের (ইন্দোনেশিয়া ভেঙে গড়ে ওঠা) মতো বাংলাদেশের একটা অংশ নিয়ে, তারপরে চিটাগাং (পার্বত্য চট্টগ্রাম), মিয়ানমার মিলে একটা খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানাবে। বঙ্গোপসাগরে একটা ঘাঁটি করবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ষড়যন্ত্র ছিলো বাংলাদেশের নির্বাচনই হতে দেবে না। তবে দেবে, আর আমারও ক্ষমতায় আসতে অসুবিধা হবে না; যদি আমি বাংলাদেশে কারও এয়ার বেজ করতে দেই, ঘাঁটি করতে দেই, তাহলে আমার কোনো অসুবিধা নেই। কোনো এক সাদা চামড়ারই প্রস্তাব।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি স্পষ্ট জবাব দিয়েছি, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশের অংশ ভাড়া দিয়ে বা কারও হাতে তুলে দিয়ে আমি ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমার ক্ষমতার দরকার নেই। জনগণ যদি চায় ক্ষমতায় আসবো নইলে আসবো না।

তিনি বলেন, এই কথাগুলো সবার জানা উচিত। আমার যেটা যুদ্ধ সেটা ঘরে বাইরে সব জায়গায়।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগর, এখানে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। আর এই জায়গায় কোনো বিতর্ক নেই, এখানে কারও কোনো দ্বন্দ্ব নেই। এই জায়গার ওপর অনেকের নজর। সেটা আমি হতে দিচ্ছি না। এটা আমার একটা অপরাধ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে এয়ার বেজ করে কার ওপর হামলা করবে। যদিও একটা দেশকে দেখানো হয় কিন্তু সেটা তো না। আমিতো জানি আরও কোথায় যাবে। যে কারণে আমাদের সব সময় কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, হবে আমি জানি। কিন্তু আমি ওটা পাত্তা দেই না সোজা কথা। আমার শক্তিই দেশের মানুষ, যদি ঠিক থাকে…। আর দেশটা যে উন্নত হচ্ছে এটা অনেকের পছন্দ না।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর আদর্শিক জোট ১৪ দলের সাথে জোট নেত্রী শেখ হাসিনার এটাই প্রথম বৈঠক। গণভবনে এই বৈঠকের শুরুতেই জোট নেতাদের স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অটুট রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ৭৫ এর পর বারবার দেশের মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। একুশ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মানুষ বুঝতে শিখেছে এই সরকার তাদের সেবক।

pm-14party-2

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, গ্রেনেড হামলাকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি; ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে রোজই আন্দোলন ও সরকার উৎখাতসহ নানা রকম হুমকি-ধমকি দেয়। যতক্ষণ জনগণ সঙ্গে আছে ওটা আমি কেয়ার করি না।

তিনি বলেন, তারপরও এরা যেন দেশে জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসংযোগ এগুলো করতে না পারে। এগুলো যারা করবে, তাদের কোনো ছাড় নাই। যতই মুরুব্বি ধরুক, আর যা-ই ধরুক, এদের আমরা ছাড়বো না। মানুষের ক্ষতি যারা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করে সরকারপ্রধান বলেন, রোহিঙ্গাদের অনেকের ঘরে সন্তানের জন্ম হচ্ছে। তাদের জনসংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। মিয়ানমারেও পরিস্থিতি ভালো নয়। তাদের তো আর ঠেলে দিতে পারি না। আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছি। যুদ্ধ করতে যাইনি, ঝগড়াও করতে যাইনি। কখন যে তাদের ফেরাতে পারবো, জানি না। আমরাও তো (মুক্তিযুদ্ধকালীন) রিফিউজি ছিলাম, ফলে রোহিঙ্গাদের কষ্টটা বুঝি। তাদের ভাসানচরে নিচ্ছি। কিছু গেছে, আরও যাবে।

বাংলাদেশের উন্নতি কারও পছন্দ হচ্ছে না

বাংলাদেশের উন্নতি কারও পছন্দ হচ্ছে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে খাদ্য উৎপাদন করি, খোদ এক বড় দেশ বলে ফেলল, এত খাদ্য উৎপাদনের দরকার কি? আমাদের তো যথেষ্ট আছে, আমরা তো দিতে পারি। আমি বললাম হ্যাঁ, ওই আশায় আমি বসে থাকবো! আমরা বলেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলে গিয়েছেন, নিজের মাটি-মানুষ দিয়ে দেশ গড়বো। আমরা সেটাই করবো। নিজেদের মানুষের খাবার এখানেই যতটুকু পারি উৎপাদন করে খাদ্য নিরাপত্তা দেবো। আমরা দিয়েছিও সেটা। এই ধরনের কথা আছে।

আমরা তো গলা টিপে ধরি না

সরকারপ্রধান বলেন, ৪৪ টেলিভিশনের মধ্যে প্রায় ৩৪টি চালু আছে। সবাই কথা বলে, টকশোতেও কথা বলে, সারা দিন সমালোচনা করে, এতগুলো সংবাদপত্র, এত কথা বলার পরে, সব কথার শেষ কথা, কথা বলতে দেয়া হয় না। টেলিভিশনে সবাই যখন এইভাবে কথা বলে আমরা তো গলা টিপে ধরি না। কেউ বাধা দেয় না। যার যা খুশি বলে যাচ্ছে। তা সত্য-মিথ্যা যা হোক।

শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে যে যার মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে সমালোচনা, মিথ্যা, অপবাদ। আর ভবিষ্যতে সমস্যা যেটা হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা, সেটা করা হচ্ছে। নজরদারিতে আনার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। শুধু আমরা না, উন্নত দেশগুলোও এ ব্যাপারে চিন্তিত। এআই মোকাবিলা করার প্রক্রিয়া খুঁজে দেখা হচ্ছে।

রিজার্ভ নিয়ে চিন্তা

মুদ্রাস্ফীতি এখন সমস্যা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা শুধু বাংলাদেশ না, আমেরিকার অর্থনৈতিক রিপোর্ট দেখলাম সেখানেও মুদ্রাস্ফীতি বিরাট সমস্যা। অনেক দেশের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে, আমাদেরও। কারণ করোনার সময় ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, আমদানি-রপ্তানি সব বন্ধ ছিলো। তখন বাইরে থেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেনি, তাই টাকাটা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে, তাই আমাদের রিজার্ভটা বেড়ে গিয়েছিলো। তারপর যখন সবকিছু চালু হলো তখন খরচ, খরচ হবেই।

তিনি বলেন, আপদকালীন সময়ের খাদ্য মজুত থাকলে রিজার্ভ নিয়ে চিন্তার কোনও বিষয় নেই। রিজার্ভ বলতে বলতে মানুষকে এত সচেতন করে দিয়েছি, সবাই রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে, জিডিপি নিয়ে কথা বলে, এটা ভালো লক্ষণ। এখন মুদ্রাস্ফীতি কমাতে পারলে মানুষের স্বস্তি হতো। উৎপাদন যথেষ্ট হচ্ছে। কোনও অভাব নেই।

পণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে অনেক খেলা হয়। আজ দেখলাম যেখানে আলু রাখে সেখানে ডিম রাখছে। আলুর কোল্ড স্টোরেজে ডিম রাখার কথা না। এ রকম ঘটনা বাংলাদেশে ঘটছে।

দেশের অর্জন ধরে রেখে সামনের দিকে এগোতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশটাকে গড়ে তুলতে হবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা না নিলে দেশটাকে আগাতে পারবো না। এখানে যে বাধাগুলো আসে, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা আমাদের বিরোধী ছিল, এখনও তারা একটুও বদলায়নি। এটা হচ্ছে বাস্তবতা এটা মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে।

১৪ দলের নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের মতামত শুনবো, আলোচনা করবো। ভবিষ্যতে আমরা কীভাবে এগোতে পারি এটাই আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক