ইরান-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের যে অবনতি ঘটেছিল, তার অবসান ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। পাশাপাশি তেহরানের সঙ্গে পূর্ণ মাত্রার কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার কথা জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনেয়ারুল হক কাকার শুক্রবার দেশটির সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে এক জরুরি নিরাপত্তা বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন।
ইসলামাবাদভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক ডন ও ইরানের প্রেসটিভি জানিয়েছে, তেহরানের সাথে পূর্ণ মাত্রার কূটনৈতিক সম্পর্কে ফিরে যেতে রাজি হয়েছে পাকিস্তান। দুই দেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতরা নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনে ফিরে যাচ্ছেন।
কাকার বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের আগে ইরান ও পাকিস্তানের সম্পর্ক যেখানে ছিলো সেখানে ফিরে যাওয়া দু’দেশের স্বার্থের জন্যই জরুরি। এক্ষেত্রে ইরানের পক্ষ থেকে গৃহীত প্রতিটি ইতিবাচক পদক্ষেপকে স্বাগত জানাবে পাকিস্তান।
সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকে পাক প্রধানমন্ত্রী।
পাক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বের সকল দেশের সাথে, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্কে বিশ্বাসী ইসলামবাদ।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানের ইরান সীমান্তবর্তী বেলুচিস্তান প্রদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী ইরানি জঙ্গি গোষ্ঠী জয়শুল আদলের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি। এ ঘটনার পরদিন ইসলামাবাদ তেহরানে নিযুক্ত নিজের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয় এবং ইসলামাবাদে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত যিনি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন তাকে পাকিস্তানে ফিরে যেতে নিষেধ করে।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার এক দিনের মাথায় ইরানের সঙ্গে পূর্ণ মাত্রার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে পাকিস্তান। এরপর বৃহস্পতিবার ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসলামাবাদ।
এমন পরিস্থিতিতে উভয় দেশকে সংযত হবার পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানের আহবান জানায় চীন।
এরই ধারাবাহিকতায় পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানি ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের মধ্যে ফোনালাপের পর এ অগ্রগতি ঘটে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।