মুন্সিগঞ্জে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত শহরের মুক্তারপুর এলাকায় এ সংঘর্ষ চলে। এসময় আটটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও আগুনে পুড়িয়ে দেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় আটজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিনহাজ-উল-ইসলাম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান, পরিদর্শক মোজাম্মেল হক, এসআই কাজল দাস, এসআই মাঈনউদ্দিন, এসআই সুকান্ত বাউল, এসআই আমিনুল হাসান, এসআই অজিত, এসআই ইলিয়াস, কনস্টেবল রায়হান, দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু, দৈনিক দিনকালের জেলা প্রতিনিধি গোলজার হোসেন ও সাংবাদিক রুবেল। এছাড়া আহত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
জানা যায়, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও নেতাকর্মীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরের পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। দুপুর আড়াইটা থেকে মুক্তারপুর এলাকার আশপাশে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। পুলিশও আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নেয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করে ওই এলাকায় আসতে শুরু করেন।
এসময় পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে চারদিক থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন তারা। পুলিশও ফাঁকাগুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। মুহূর্তেই চারদিক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশ ও সাংবাদিকদের আটটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয় বেশ কয়েকজনকে।
সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সদর উপজেলা, মুন্সিগঞ্জ শহর ও মিরকাদিম পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা মুক্তারপুর ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো হচ্ছিল। এসময় হঠাৎ পুলিশ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। মিছিলের ব্যানার কেড়ে নেয় ও লাঠিচার্জ করে। এতে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়। পুলিশ টিয়ারশেল ও গুলি ছোঁড়ে। এতে আমাদের ৭০-৮০ জন আহত হয়েছে। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বলেন, কোনো রকমের সভা-সমাবেশের অনুমতি ছিল না। অনুমতি ছাড়া তারা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যানচলাচলের বাঁধা দিচ্ছিল। তাদের দুই গ্রুপ (রতন-আব্দুল হাই) নিজেরা মারামারি করছিল। এ কারণে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য গিয়েছে। এসময় তারা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে। পুলিশ তখন আত্মরক্ষার্থে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আমাদের পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।