ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার রাজবাড়ীর মহিলা দলের নেত্রী সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে সোমবার (৩১ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি আকরাম হোসেন ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদদীনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিবাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এদিন আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এজে মুহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট জামিলা আক্তার, অ্যাডভোকেট রোকনুজ্জামান সুজা, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট রাসেল আহমেদ, অ্যাডভোকেট আল ফয়সাল সিদ্দিকী ও অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ছোটন।
প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারের অভিযোগে গত ৪ অক্টোবর রাতে রাজবাড়ী পৌরসভার বেড়াডাঙ্গা এলাকার নিজ বাসা থেকে সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন ৫ অক্টোবর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর রাজবাড়ীর এক নম্বর আমলি আদালতে সোনিয়া আক্তারের জামিনের আবেদন করা হয়। বিচারক কায়ছুন নাহার সুরমা জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম জানিয়েছেন, সোনিয়া আক্তার স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা মহিলা দলের সদস্য। তিনি রাজবাড়ী পৌরসভার ৩ নম্বর বেড়াডাঙ্গা এলাকার প্রবাসী মো. খোকনের স্ত্রী।
মহিলা দলের এই নেত্রী নিজের ফেসবুক আইডিতে বিভিন্ন সময় সরকারের বিপক্ষে লেখালেখি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সামসুল আরেফিন চৌধুরী ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় ওই ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রাজবাড়ী সদর থানায় দণ্ডবিধি ১৫৩ ও ৫০৫ ধারায় মামলা নেয় পুলিশ।
মামলা দায়েরের প্রায় এক মাস আগে সোনিয়া ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ওই পোস্ট দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের এক পরিদর্শক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সোনিয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করেন।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট সোনিয়া আক্তার তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে ‘আপত্তিকর’ কথা লেখেন। পোস্টটিতে প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ন ও মানহানি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।