তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে সমতা ফেরালো শ্রীলঙ্কা। পাথুম নিশাঙ্কার সেঞ্চুরিতে টাইগারদের ৩ উইকেটে হারিয়েছে লঙ্কানরা। এই জয়ে সিরিজে ১-১ এ সমতা আনলো সফরকারীরা।
শুক্রবার জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠান লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। প্রথমে ব্যাট করে সৌম্য সরকার ও তাওহিদ হৃদয়ের ফিফটিতে ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান লঙ্কান ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্দো। এরপর ক্রিজে আসা কুশল মেন্ডিসকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন পাথুম নিশাঙ্কা।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৪১ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। ভয়ঙ্কর হতে যাওয়া এই জুটি ভাঙেন পেসার তাসকিন আহমেদ। দলীয় ৪২ রানে ১৩ বলে ১৬ রান করা কুশল মেন্ডিসকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন।
এরপর ক্রিজে আসা সাদিরা সামারাবিক্রমাকে আউট করে বাংলাদেশকে তৃতীয় সাফল্য এনে দেন শরিফুল। ৪ বলে ১ রান করে আউট হন এই লঙ্কান ব্যাটার।
সামাবিক্রমার বিদায়ের পর চারিথ আসালাঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন নিশাঙ্কা। সাবলীল ব্যাটিংয়ে রানের চাকা সচল রাখেন এই দুই ব্যাটার। ৫৮ বলে ফিফটি পূরণ করেন নিশাঙ্কা।
মারমুখী ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন নিশাঙ্কা। ১৮৫ রানের জুটি গড়েন এই দুই লঙ্কান ব্যাটার। তবে দলীয় ২২৮ রানে ১১৩ বলে ১১৪ রান করে আউট হন নিশাঙ্কা।
এরপর দ্রুতই আরও দুই উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। আসালান্কা ৯৩ বলে ৯১ ও জেনিথ লিয়ানাগে ১৬ বলে ৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। এরপর ওয়ানিন্দু হাসারান্গার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে জয়ের ভীত পার লঙ্কানরা। শেষ পর্যন্ত ১৭ বাকি থাকতে ৩ উইকেটের জয় পায় শ্রীলঙ্কা।
সিরিজ জয়ের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে বড় লক্ষ্য বাংলাদেশের
ভালো শুরুর পর খেই হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশের হাল ধরেন তাওহিদ হৃদয়। শেষ দিকে তার অনবদ্য ব্যাটে শক্ত পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২৮৭ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠান লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। প্রথমে ব্যাট করে সৌম্য সরকার ও তাওহিদ হৃদয়ের ফিফটিতে ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় বলেই রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান লিটন। এরপর ক্রিজে আসেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শান্ত। টাইগার অধিনায়ককে সঙ্গে নিয়ে শুরুর এই ধাক্কা সামাল দেন সৌম্য।
সাবলীল ব্যাটিংয়ে রানের চাকা সচল রাখেন এই দুই ব্যাটার। ৭৫ রানের জুটি গড়েন শান্ত-সৌম্য। তবে ৩৯ বলে ৪০ রান করে আউট হন টাইগার অধিনায়ক। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন তাওহিদ হৃদয়।
ম্যাচের আগে দুই হাজারি ক্লাবে পৌঁছাতে সৌম্যর দরকার ছিল ৫৬ রান। ১১ চার ও এক ছক্কায় ৬৬ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে ফিরেছেন। তার রানসংখ্যা এখন ২০১২। ৬৮তম ম্যাচে এসে এই ক্লাবে পৌঁছালেন। নয় বছরের ক্যারিয়ারে ৬৪ ইনিংসে ব্যাট করে ১২ ফিফটি ও ৩ সেঞ্চুরি তুলেছেন তারকা ওপেনার।
২১.২ ওভারে হাসারাঙ্গার বলে তালুবন্দি হন মাধুশঙ্কার হাতে। সৌম্য ফেরার পর টিকতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ২ বল মোকাবেলা করে রানের খাতা খোলার আগে ফিরে যান।
রান পেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। তিন চারে ২৮ বলে ২৫ রান করে ফিরেছেন। টিকতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজও। ১৮ বলে ১২ রান করে ফিরে যান।
৩৫.৫ ওভারে ১৮৯ রানে মিরাজ ফেরার পর তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়ে ৬২ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন হৃদয়। ৪৭তম ওভারের প্রথম বলে হাসারাঙার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তানজিম। ৩৩ বলে ১৮ রান করেন লোয়ারঅর্ডার ব্যাটার।
শেষদিকে তাসকিন আহমেদকে সঙ্গী করে ২৩ বলে ৫০ রানের ঝড়ো অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ইনিংস শেষ করেন হৃদয়। ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ১০২ বলে ৯৬ রান করে অপরাজিত থাকেন হৃদয়। হৃদয়ের ক্যারিয়ারসেরা ব্যাটিং এটি। ওয়ানডেতে হৃদয়ের সর্বোচ্চ রান ছিল ৯২। দুটি চার ও এক ছক্কায় ১০ বলে ১৮ রানের ঝড়ো ক্যামিও উপহার দেন তাসকিন।
লঙ্কানদের হয়ে আগুনঝরা বোলিং করেছেন ভানিডু হাসারাঙ্গা। ১০ ওভারে ৪৫ রান খরচায় নিয়েছেন ৪ উইকেট। দিলশান মাধুশঙ্কা দুটি এবং প্রমোধ মাধুশান নেন এক উইকেট।
ফিরলেন তানজিম সাকিব
তাওহীদ হৃদয় ও তানজিম হাসান সাকিবের জুটিতে বাংলাদেশ ৩৯তম ওভারের পঞ্চম বলে দুইশ ছুঁয়েছে।
এর পরপরই ৭৪ বলে ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তাওহীদ হৃদয়।
তাওহীদ হৃদয় ও তানজিম হাসান সাকিবের সপ্তম উইকেটের জুটি পঞ্চাশ পার করার পথে ছিলো। কিন্তু তার প্রমোদ মাদুশান ঘটান ছন্দপতন। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ক্যাচ হওয়ার আগে তানজিম সাকিব করেন ৩৩ বলে ১৮ রান।
৪৯ তম ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৭১ রান।
হাসারাঙ্গার ঘূর্ণিতে ধরাশায়ী মুশফিক-মিরাজ
ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার তিন বলের মধ্যে সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে হারিয়ে বড় ধরনের চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর ক্রিজের নিয়ন্ত্রণ নেন মুশফিকুর রহিম ও তাওহীদ হৃদয়। অনেকটাই ধকল সামলে ওঠে টাইগাররা। ২৮তম ওভারে দু’জনের ওপর ভর করে দলীয় স্কোর দাঁড়ায় দেড়শ’ ছাড়ায়। তবে ৪৩ রানের বেশি তুলতে পারেনি এ জুটি।
৩২তম ওভারে বোলিংয়ে ফিরেই তাদের বিচ্ছিন্ন করেন সেই ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। এলবিডব্লিউর আবেদন করেন লঙ্কান স্পিনার। আম্পায়ার তা নাকচ করে দিলেও ডিআরএস নেয় সফরকারীরা। আর তাতেই বদলে যায় সিদ্ধান্ত।
৩ চারে ২৮ বলে ২৫ রান তুলে বিদায় নেন মুশফিক।
এদিকে মেহেদী হাসান মিরাজকে বোল্ড করে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা তার চতু্র্থ শিকার নিশ্চিত করেন। ৩৪তম ওভারের শেষ বলে মিরাজ থামেন ১৮ বলে ১২ রান করে।
৪০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২০৬ রান।
সৌম্যর পর ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ, চাপে বাংলাদেশ
লিটনের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে দারুণ জুটি গড়েন নাজমুল হাসান শান্ত ও সৌম্য সরকার। অনেকটাই এগিয়ে নেন দলকে। কিন্তু ২২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে থেমে গেলেন সৌম্য সরকার।
হাফ সেঞ্চুরি করা এ বাঁহাতি ব্যাটার ৬৬ বলে ১১ চার ও ১ ছয়ে ৬৮ রান করেছেন। দিলশান মাদুশাঙ্কা দারুণ ক্যাচ নিয়ে তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে তার ৫৫ রানের জুটি ভেঙে দেন।
এদিকে একই ওভারে স্টাম্পিং হয়ে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মাত্র ২ বল খেলে শূন্য রানেই ফিরতে হয় তাকে।
লঙ্কান স্পিনারের চতুর্থ বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ব্যাট মিস করে বল যায় কুশল মেন্ডিসের হাতে। সময় অপচয় না করে ক্রিজে ফেরার আগেই স্টাম্প ভেঙে দেন।
২৫ ওভার শেষে চার উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৪১ রান।
শান্তর বিদায়ের পর সৌম্যের ফিফটি
বাংলাদেশের খাতায় কোনো রান যোগ না হতেই প্যাভিলিয়নে ফেরত যান লিটন। তারপর শান্তকে নিয়ে সৌম্য শুধু ধাক্কা সামলান নাই, ঘুরিয়েছেন রানের চাকাও। তবে এই দুই বামহাতির জুটি ভাঙে দলীয় ৭৫ রানের মাথায়। এরপর ব্যক্তি ফিফটি তুলে নিয়েছেন সৌম্য।
পূর্ণকালীন অধিনায়ক হিসেবে টানা দুই ওয়ানডেতে পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংস খেলার পথে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু ৩৯ বলে ছয় চারে ৪০ রান করে থামলেন তিনি।
১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দিলশান মাদুশাঙ্কার শিকার হন শান্ত, ক্যাচ দেন কুশল মেন্ডিসকে।
এরপর ব্যাট করতে আসেন তৌহিদ হৃদয়। এসেই দিলশান মাদুশাঙ্কার তৃতীয় শিকার হতে পারতেন তিনি। ব্যক্তিগত ছয় রানে কুশল মেন্ডিসের হাত ফসকে বেঁচে যান হৃদয়।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৯ ওভারে দুই উকেট হারিয়ে ১১৩ রান। সৌম্য ৫৩ এবং হৃদয় ১৫ রানে ব্যাট করছেন।
শূন্য রানে ফিরলেন লিটন, শুরুর ধাক্কা সামলাচ্ছেন সৌম্য-শান্ত
গোল্ডেন ডাক দিয়ে সিরিজ শুরু করা লিটনের দ্বিতীয় ম্যাচও সুখের হলো না। এদিনও প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন খালি হাতেই। ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন এই ওপেনার।
লঙ্কান পেসার দিলশান মাদুশঙ্কার করা প্রথম ওভারে স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তখন দলের খাতায় যোগ হয়নি কোনো রান।
এরপর শান্তকে সঙ্গে দিয়ে শুরু ধাক্কা সামাল দিচ্ছেন সৌম্য সরকার। তবে শান্তর রানের চাকা ঘুরছে ছয়ের ওপরে। আর খানিকটা ধীরস্থির রয়েছেন সৌম্য।
ইতিমধ্যে ৩১ বল খেলে ছয়টি বাউন্ডারিতে ৩৪ রানে ব্যাট করছেন শান্ত। আর ২৬ বলে পাঁচ বাউন্ডারির সাহায্যে ২৭ রানে ব্যাট করছেন সৌম্য।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ১০ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে ৬৪ রান।