আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে আসর শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরের তিন ম্যাচ হেরে টাইগারদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে! ঘুরে দাঁড়ানোর মিশনে বাংলাদেশের সামনে এবার উড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস হেরে শুরুতে ফিল্ডিং করে সাকিব আল হাসানের দল।
বাংলাদেশ খুঁজে পেলো আশা। মেহেদী হাসান মিরাজ সেটি বাড়ালেন পরে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে একজন খেললেন অবলীলায়, বাংলাদেশকে পেলে যেটি বরাবরই করেন কুইন্টন ডি কক। শেষ অবধি শুরুর শঙ্কা উড়িয়ে প্রোটিয়াদের রান গেছে তিনশ ছাড়িয়ে।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৮২ রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। জিততে হলে রেকর্ডই গড়তে হবে টাইগারদের। বিশ্বকাপ ইতিহাসে ৩৮৩ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই কারও।
এ ম্যাচে বাংলাদেশ খেলতে নামে তাওহীদ হৃদয়কে ছাড়া। দলের কম্বিনেশন অথবা খারাপ পারফরম্যান্স; যে কারণেই হোক সাকিব আল হাসানকে জায়গা করে দেন তিনি। মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর পর চলতি বছর তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন হৃদয়।
বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটের জন্য অবশ্য লম্বা অপেক্ষা করতে হয়নি। শরিফুল ইসলাম সপ্তম ওভারের প্রথম বলে বোল্ড করেন ১৯ বলে ১২ রান করা রেজা হেনড্রিকসকে। পরের উইকেটের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়নি বেশিক্ষণ। ইনিংসের শুরু থেকে বল করা মেহেদী হাসান মিরাজ এবার ৭ বলে ১ রান করা রাসি ফন ডার ডুসেনকে এলবিডব্লিউ করেন।
মিরাজকে সাকিব চালিয়ে নেন পরেও। তাকে দিয়ে করানো টানা ছয় ওভারে কিছুটা অস্বস্তিতেও ছিলেন কুইন্টন ডি কক। কিন্তু সেটি যে একদমই সাময়িক, পরে যত সময় গেছে ভালোমতোই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। ১৩৭ বলে ১৩১ রানের জুটি গড়েন এইডেন মারক্রামের সঙ্গে। ৭ চারে ৬৯ বলে ৬০ রান করা মারক্রামকে ফেরান সাকিব।
কিন্তু ডি কক সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন, এরপর আরো ধরা দিয়েছেন বিধ্বংসী রূপেই। এর মধ্যে সাবেক অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে গেছেন তিনি। ৬০১ রান করেছেন তিনি ১০ ইনিংসে, ১২ ইনিংসে স্মিথের রান ছিল ৫৭২।
এবারের বিশ্বকাপে ১০১ বলে নিজের তৃতীয় শতক ছোঁয়া এই ব্যাটার পরের পঞ্চাশ রান করেছেন স্রেফ ২৮ বলে। সাকিবের করা ৪৩তম ওভারে ২২ ও শরিফুলের পরের ওভারে নেন ১৭ রান।
ইনিংস শেষের আগেই অবশ্য তাকে ফেরানো গেছে। হাসান মাহমুদের ফুল লেংথের বল খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়ানো নাসুম আহমেদকে ক্যাচ দেন তিনি। ভাঙে ক্লাসেনের সঙ্গে ১৪২ রানের জুটি ৭ ছক্কা ও ১৫ চারে ১৪০ বলে ১৭৪ রান করা এই ব্যাটার ড্র্রেসিংরুমে ফেরেন দর্শকদের কাছ থেকে অভিবাদন পেতে পেতে। দারুণ এক ইনিংস খেলে ভেঙেছেন রেকর্ড। উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে এটাই বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে ২০০৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪৯ রান করেছিলেন অজি কিংবদন্তি অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।
ডি কককে ফিরিয়েও অবশ্য কাজ হয়নি তেমন। এরপর তাণ্ডব চালান হাইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার মিলে। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির কাছে থাকা ক্লাসেন শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৪৯ বলে ২ চার ও ৮ ছক্কায় করেন ৯০ রান। এছাড়া মিলার অপরাজিত থাকেন ১৫ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে। বাংলাদেশের হয়ে হাসান দুটি উইকেট শিকার করেছেন। সাকিব, মিরাজ ও শরিফুল ঝুলিতে পুড়েন একটি করে উইকেট