বাংলাদেশসহ ছয় দেশে ৯৯ হাজার ১৫০ টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। অন্যান্য যেসব দেশে পেঁয়াজ পাঠানো হবে তা হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটান, বাহরাইন, মরিশাস এবং শ্রীলঙ্কা। ভারত সরকারের ওয়েবসাইটে শনিবার এ তথ্য দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আগের বছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ সালে কম ফলন ও রবি মৌসুমে দেশের ভিতরে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
এসব দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করে ভারতীয় এজেন্সি ন্যাশনাল কো-অপারেশন এক্সপোর্টস লিমিটেড (এনসিইএল)। সর্বনিম্ন দর (এল১) মূল্যে ই-প্লাটফর্মের মাধ্যমে তারা অভ্যন্তরীণ সোর্স থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করে। তারপর শতভাগ আগাম মূল্য পরিশোধ ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে রেট নির্ধারণ করে গন্তব্য দেশগুলোতে এজেন্সি বা সরকার মনোনীত এজেন্সিকে সরবরাহ দিয়ে থাকে।
যেসব দেশ পেঁয়াজ কিনছে সেখানকার দাম, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ দাম বিবেচনায় নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে দর নির্ধারণ করে এনসিইএল। এখন যে দেশগুলোতে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেখানকার চাহিদা অনুযায়ী কোটা বরাদ্দ করা হয়েছে। ভারতে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন করে মহারাষ্ট্র। তারাই এনসিইএল’কে রপ্তানির জন্য সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ সরবরাহ করে থাকে।
এ ছাড়া দুই হাজার টন সাদা পেঁয়াজও রপ্তানিরও অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার। এসব পেঁয়াজ বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে এবং ইউরোপের কিছু দেশের বাজারে রপ্তানি করা হয়। সাধারণ পেঁয়াজের চেয়ে এই পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ বেশি। কারণ, এর বীজের দাম অনেক বেশি হয়, উন্নত কৃষি রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন হয়।
এর আগেও ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় অস্থির হয়ে ওঠে দেশের পেঁয়াজের বাজার। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম দুইশ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এরপর ভরা মৌসুমেও দেশে পেঁয়াজের দাম কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নামেনি।
রমজানে বাজারে সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে রোজার আগেই ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করতে চায় সরকার। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে এই পেঁয়াজ রপ্তানি করে ভারত। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১ মার্চ ভারত ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানির ঘোষণা দেয়।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু গত ২৪ জানুয়ারি টেলিফোনে ভারতের বাণিজ্য, শিল্প, বস্ত্র ও ভোগ্যপণ্য এবং খাদ্য ও গণ বিতরণ বিষয়ক মন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে আলাপ করেন। এ সময় আহসানুল ইসলাম টিটু ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীকে এক লাখ টন চিনি ও ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ সরবরাহের পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান। গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা’ বিষয়ক টাস্কফোর্সের সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সাংবাদিকদের জানান, নীতিগতভাবে ভারত সরকার পেঁয়াজের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে।