ভারতীয় শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে বন্দর ও বিমানবন্দর দিয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। বুধবার নয়াদিল্লিতে নিয়মিত সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের এই সুবিধা বাতিলের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কারণে আমাদের বিমানবন্দর এবং বন্দরগুলোতে দীর্ঘসময় ধরে ব্যাপক যানজট তৈরি হচ্ছে। এর ফলে লজিস্টিক সহায়তা পৌঁছাতে দেরি এবং ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আমাদের নিজস্ব রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং বন্দরে অনেক সময় ধরে পণ্য আটকে থাকছে।
তিনি বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতিতে এই সুবিধা ৮ এপ্রিল থেকে কার্যকরভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর স্পষ্ট করে বলতে গেলে, এই পদক্ষেপ ভারতীয় ভূখণ্ডের মাধ্যমে নেপাল বা ভুটানে বাংলাদেশের রপ্তানিতে প্রভাব ফেলবে না।’’
এর আগে, মঙ্গলবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে বন্দর ও বিমানবন্দর দিয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। এতদিন এই সুবিধার ফলে ভুটান, নেপাল এবং মিয়ানমারের মতো দেশে বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য বাণিজ্য প্রবাহ বাধাহীন ছিল। ভারত ২০২০ সালের জুনে বাংলাদেশকে পণ্য রপ্তানির এই সুবিধা দিয়েছিল।
আগের বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে যাওয়ার পথে দেশটির স্থল শুল্ক স্টেশন (এলসিএসএস) ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে রপ্তানি কার্গো ট্রান্সশিপমেন্টের অনুমতি দেওয়া হতো। ভারতীয় বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের সরকারের এই সিদ্ধান্ত পোশাক, পাদুকা, রত্ন এবং গহনার মতো কয়েকটি ভারতীয় রপ্তানি খাতের জন্য সহায়ক হবে।
বিশ্ব বাণিজ্যে পোশাক খাতে ভারতের অন্যতম বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ। ভারতীয় রপ্তানিকারকদের সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের (এফআইইও) মহাপরিচালক অজয় সাহাই বলেছেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন আমাদের কার্গো পরিব্হনে অতিরিক্ত সক্ষমতা থাকবে। অতীতে রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কারণে বন্দর ও বিমানবন্দরে স্থান কম পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করতেন।’’
এর আগে, ভারতের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন এইপিসি বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধার আদেশ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছিল। ওই সুবিধার ফলে দিল্লি এয়ার কার্গো ভবনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্গো তৃতীয় দেশে ট্রান্স-শিপমেন্টের অনুমতি পেতো।












The Custom Facebook Feed plugin