আগামী ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য পঞ্চম কৌশলগত সংলাপ। এতে অংশ নিতে বাংলাদেশে আসছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থায়ী আন্ডার সেক্রেটারি ফিলিপ বার্টন। সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, গতকাল রোববার পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেনর নেতৃত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোর সঙ্গে ঢাকা-লন্ডন কৌশলগত সংলাপের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
জানা গেছে, প্রায় দুই বছর পর অনুষ্ঠেয় এ সংলাপে লন্ডনের গুরুত্ব মানবাধিকার, গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার ও বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন হলেও ঢাকার পক্ষ থেকে বন্দি বিনিময় এবং আইনি সহায়তায় মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স (এমএলএ) চুক্তির বিষয়ে প্রাধান্য দেয়া হবে। সংলাপে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবেন পররাষ্ট্রসচিব।
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠেয় এ সংলাপে যুক্তরাজ্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বার্তা দিবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বাংলাদেশও এ ব্যাপারে সরকারের অঙ্গীকার ও নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরবে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক সূত্র জানায়, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের চতুর্থ সংলাপ লন্ডনে হয়েছিল। সেসময় বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে অপরাধীদের যেন বিচারের আওতায় আনা যায় এ নিয়ে চুক্তি করার বিষয়ে দুই দেশ সম্মত হয়েছিল। চুক্তিটি করার বিষয়ে সংলাপে তাগিদ দেওয়া হতে পারে।
আরও জানা গেছে, একাধিক মামলায় দণ্ডিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তাকে বাংলাদেশে হস্তান্তরের জন্য যুক্তরাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। পাশাপাশি একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি চৌধুরী মঈনুদ্দীন লন্ডনে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ। পলাতক থাকায় তার রায় কার্যকর করা যায়নি। এ ছাড়া অবৈধ অস্ত্র ও জাল টাকা রাখার মামলায় সাজা হওয়া সেনাবাহিনীর সাবেক কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানের কথা বলা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত কিছু বাংলাদেশি নাগরিক দেশবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি এবং পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি করা গেলে এসব পলাতক আসামী ও অপপ্রচারকারীদের দেশে ফিরিয়ে শাস্তির আওতায় আনা সহজ হবে।
আরও জানা গেছে, আসন্ন এ সংলাপে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পর্যালোচনা, ইন্দো-প্যাসিফিক, রোহিঙ্গা ইস্যু, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মানবাধিকার, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব, দক্ষ ও নিরাপদ অভিবাসন, যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাংলাদেশে সুযোগ দেওয়া এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা, আঞ্চিলক ও বৈশ্বিক ভূরাজনীতিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করবে দুই দেশ।